রামগড়ে অটোরিক্সার দৌরাত্বে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ

খাগড়াছড়ির রামগড় বাজারে সবজি বিক্রি করে মোতালেব হোসেন সোনাইপুল নেমে ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা চালককে ১০টাকা দিতেই বেঁকে বসলেন বাইকওয়ালা। জোর গলায় বলে উঠলেন- “ভাই ১২টাকা দেন!” চালকের বলার ভঙ্গিতে মেজাজ তিরিক্ষি হযে ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেক তর্কাতর্কির পর ১০টাকার ভাড়া আজ ১২টাকা দিতে হলো তাকে।

কেবল মোতালেব হোসেন নন, পৌরসভার প্রতিটি পয়েন্টে এমন অসংখ্য অটো রিকশা যাত্রীর সঙ্গে ব্যাটারিচালিত বাইকওয়ালাদের ভাড়া নিয়ে গোলমাল হচ্ছে গত ১লা জানুয়ারী থেকে।

চলছে খিস্তি খেউর, ঘটছে হাতাহাতিসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনাও। অটোরিকশা চালকরা বিদ্যুতের দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে হঠাৎ করেই সর্বনিম্ন ভাড়া জনপ্রতি ৫ টাকা থেকে স্থানবেধে নির্ধারণ করেছেন সর্বোচ্ছ ২৫ টাকাও। কেউ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে উঠে মাঝপথে নেমে গেলেও দিতে হয় ৫টাকা। ফলে অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্মে সাধারণ যাত্রীরা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এদিকে ভাড়া বৃদ্ধির কারণে সোসাল মিডিয়া ফেসবুকে চলছে নানান সমালোচনা যাত্রীরা চান চালক সমিতি নয় বরং ভাড়া নির্ধারণ করবে পৌরসভা কিংবা প্রশাসন।

অটো রিকশার চার্জের কারণে একদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং অপরদিকে বাড়তি ভাড়ার ধকল, দুই সামাল দিতে হচ্ছে রামগড়বাসীকে। কোন নিয়মনীতি না থাকায় বিভিন্ন রুটে অটোচালক ইচ্ছেমত ভাড়া হাঁকছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভাড়া নির্ধারণে স্থানিয় প্রশাসন কিংবা পৌরসভাবে অবগত না করেই সমিতির ইচ্ছামত ভাড়া নির্ধারণ করেছে চালক সমিতি।

NewsDetails_03

যাত্রীদের অভিযোগ, পৌরসভা ও এর আশপাশের এলাকায় পৌরসভা কর্তৃক নিবন্ধিত বিপুল সংখ্যক ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা চলাচল করছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব অটো রিকশায় স্থানীয়রা কম খরচে যাতায়াত করতেন। তবে অতি সম্প্রতি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ার অজুহাতে চালকরা গত ১ লা জানুয়ারী যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। আর এই নিয়ে যাত্রী ও অটোরিকশা চালকদের মধ্যে বাদানুবাদসহ অপ্রীতিকর ঘটনা বাড়ছেই। এ পরিস্থিতিতে সমিতি নয় স্থানীয় প্রশাসন পৌরসভা কর্তৃক চালক ও যাত্রী উভয়কে বিবেচনা করে ভাড়া নির্ধারণ হওয়া জরুরি।

এদিকে, একসময়ের রিক্সা-নগরী হিসেবে পরিচিত শহরে এখন রিকশা উদাও। বিদ্যুতে চার্জ দেওয়া ব্যাটারি-চালিত অটো রিকশার দাপটে পরিবেশ বান্ধব রিকশাশূন্যতা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া রামগড় ও সোনাইপুল মূল সড়ক এখন প্রতিনিয়ত অটোরিক্সার দখলে লেগে থাকে যানযট। বয়স্ক ও শিশু ড্রাইভারদের হাতে ঘটছে নিয়মিত দুর্ঘটনা। ওদের নেই নির্ধারিত কোন স্টান্ড যত্রতত্র করা হয় গাড়ি ফার্কিং।

রামগড় ইজিবাইক চালক সমিতির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, যেখানে এককাপ চা ১০ টাকা সেখানে ২টাকা বৃদ্ধি সামান্য। তবে সমিতির নেতৃবৃন্দ পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলরদের সাথে বৈঠক করে ভাড়া বৃদ্ধি করেছেন বলে জানান।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা দিদারুল আলম জানান, চালক সমিতি একতরফা ভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করতে পারেন না এজন্যে তাদেরকে অবশ্যই স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সকলের জন্য ভাল হয় এমন ভাড়া নির্ধারণ করা উচিৎ। তবে ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে চালক সমিতি তাকে অবগত করেননি বলে তিনি জানান।

পৌর মেয়র রফিকুল আলম কামাল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অটোরিক্সা চালক সমিতির সাথে ভাড়া বৃদ্ধির কোন আলোচনাই হয়নি। চালক সমিতি ভাড়া বৃদ্ধির সিন্ধান্তে আমার নাম ব্যবহার করছেন তা দুঃখ জনক। এব্যাপারে আজই সমিতির নেতৃবৃন্দকে ডাকা হবে।

আরও পড়ুন