১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর আজকের এইদিনে পাক হানাদার মুক্ত হয় ১নং সেক্টরের রামগড় মহাকুমা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও শরণার্থীদের আসা যাওয়া সহ বিভিন্ন ঘটনার সাক্ষী রামগড়।
উপজেলা পরিষদ লেকের পাশে ৭ই মার্চের ভাষণ থেকে শুরু করে বিজয় উল্লাসের দিনের বিভিন্ন স্মৃতি সম্বলিত ম্যুারেল তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু ৮ ডিসেম্বর রামগড়ে যে স্থানে প্রথম বিজয় উল্লাস হয়েছিল সে রামগড় ডাকঘরটি সংরক্ষণের অভাবে এখন পরিত্যক্ত। স্মৃতি সংরক্ষণে রামগড়ের বিজয় উল্লাসের স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ সহ রামগড় ডাকঘরটিকে সংরক্ষণের দাবি মুক্তিযোদ্ধা ও তরুণ প্রজন্মের। মুক্তিযুদ্ধের বহু স্মৃতি বিজড়িত রামগড়ে স্মৃতি ভাস্কর্য তৈরী ও সংরক্ষণের কথা জানালেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক।
মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আহমদ বলেন, ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের কালো রাত্রিতে পাক হানাদার যখন নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার প্রতিরোধে ২৬ মার্চ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচাীন জনপদ রামগড়ে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে বাংলা দামাল ছেলেরা। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকে রামগড়ের তরুণ প্রজন্মের মাঝে সংগ্রামের চেতনা জাগ্রত হতে থাকে। পরবর্তীতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। শুধুমাত্র রামগড়ের মুক্তিযোদ্ধারা নয় দেশের বিভিন্ন জায়গার মুক্তিযোদ্ধারা রামগড় দিয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা সমর কৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, মিত্র বাহিনীর বিমান হামলায় ৬ ডিসেম্বর রামগড়ে পাক বাহিনীর অস্ত্র গুদাম ধ্বংস করে দেয়া হয়। এতে করে শত্রু পক্ষ দূর্বল হয়ে পড়ে। পাক বাহিনীরা ক্যাম্প ছেঁড়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে পালালে জয় বাংলা তোপধ্বনিতে মুক্তিযোদ্ধারা ৮ ডিসেম্বর রামগড় হানাদার মুক্ত ষোঘণা করে মুক্তিযোদ্ধারা ডাকঘরের ছাদে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
রামগড় উপজেলা ছাত্রলীগের আহব্বায়ক কাউসার হাবিব বলেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও রামগড়ের অবদানের কথা দেশবাসী জানেন না। দেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে রামগড়ের ইতিহাস তুলে ধরতে স্মৃতি সম্বলিত স্থান সমূহকে সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
জেলা প্রশাসক মো: রাশেদুল ইসলাম বলেন, রামগড় মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধে রামগড়ের ইতিহাস সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যদি স্থানীয়দের সহযোগীতা পায় তাহলে রামগড়ে একটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।