রুমায় ৩৩৩ জন শিশু পেল শিক্ষা, স্বাস্থ্য সামগ্রী ও ফলজ চারা

NewsDetails_01

এক হাতে কোলে দুধ খাওয়া বাচ্চার মাথায় হাত বুলাচ্ছে। আরেক হাত দিয়ে আরেক ছেলের হাত ধরে অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল। মসৃন চেহারায় তাঁর দুখ চোখ ফাল-ফাল করে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছিল। বারান্দায়-দুগ্ধ মা’দের ভীর। তখন গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল বারান্দার বাইরে। এ মায়ের নাম লেংরুং ম্রো (২৫)। তার তিন সন্তানের মধ্যে মেজ সন্তান কিংওয়াই ম্রো শিশু শ্রেণিতে পড়ে এবং পার্বত্য শিশু উন্নয়ন প্রকল্প-বিডি-০৫০৭ এর তালিকাভুক্ত সুবিধা ভোগি শিশুটি।

প্রকল্পের উপকারভোগী হিসেবে মা লেংরং ম্রো বাচ্চাদের পুষ্টি খাবার, শিক্ষা সামগ্রি ও ফলজ চারা নিতে এসেছিলেন তখন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বেসরকারী সংস্থা আগাপে’র বাস্তবায়নে ৩৩৩জন শিশু ও শিশুর অভিভাবকের মাঝে পুষ্টি খাবার হিসেবে ডিম, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ করা। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় রুমা সদরে থানা পাড়ায় আগাপে’র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভবতোষ চক্রবর্তী।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের বিডি-০৫০৭ এর স্থানীয় কমিউনিটি কমিটি (এলসিসি) নির্বাহী সদস্য গাব্রিয়েল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্যবস্থাপক সুমন ত্রিপুরা, রুমা প্রেস ক্লাবের সভাপতি শৈ হ্লা চিং মারমা ও এলসিসি সদস্য পদেরং ত্রিপুরা।

NewsDetails_03

এদিকে প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সুমন ত্রিপুরা বলেন, নির্বাচিত ৩১৫ পরিবারের ৩৩৫ জন শিশুকে ফলজ চারা, স্কুল ব্যাগসহ শিক্ষা সামগ্রী ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। তার মধ্যে ১৩৫জন দুগ্ধ মা ও গর্ভবতী মা’দের পুষ্টি খাদ্যের অংশ হিসেবে ৩০টি করে ডিম, ১৯৮ জন স্কুল ব্যাগসহ শিক্ষা সামগ্রী, ১৩৫জনকে একটি করে নারিকেল চারা ও ৩৩৩ জনকে স্বাস্থ্য সামগ্রী হিসেবে ট্যুট পেস্ট বিতরণ করা হয়েছে। ফলে নিবন্ধিত এক পরিবার একাধিক আইটেম পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবস্থাপক সুমন ত্রিপুরা।

অন্যদিকে নিবন্ধিত শিশু কংওয়াই ম্রো’র মা লেংরুং ম্রো বলেন তাঁর স্বামী একটি এনজিওতে সীমিত বেতনে কাজ করেন। পুষ্টি যুক্ত খাবারগুলো কেনা হলেও এক সাথে ৩০টি ডিম এপর্যন্ত কখনো ঘরে আনা হয়নি। এ ডিম আমার সন্তানদের বেশ কয়েকদিন খাওয়াতে পারবেন বলেন, লেংরুং ম্রো।
এসময় মুসকি হেসে এগিয়ে ফাতেমা বেগম(২৩)। বলেন, আর কোলে শিশু সন্তানের বয়স তিনমাস। বাম হাতে ধরা শিশুটির বয়স সাড়ে তিন বছর।

ফাতেমা বলেন, তাঁর স্বামী গাছের শ্রমিকের কাজ করেন। তাই এ সংস্থা থেকে না দিলে এক সাথে এতো ডিম, স্কুল ব্যাগ ও ছাতাসহ খাতা-কলম বাড়িতে কিনে আনা আমার স্বামীর পক্ষে সম্ভব হত না।

অন্যান্য জিনিসপত্রসহ এক সাথে ৩০টি ডিম পরিবারের জন্য সত্যি ভাল হবে। কারণ ডিম কিনতে খরচ বেচে যাবে, পুষ্টিও পুরন হবে, বেশ কয়েকদিন ডিম কিনতে হবে না। একই কথা বলেছেন, দুই সন্তানের মা জাসিন্তা ত্রিপুরা (২৫)।

আরও পড়ুন