রোয়াংছড়ির চাঞ্চল্যকর অমন্ত সেন হত্যার আসামী গ্রেপ্তার
বিরোধ ৩৫ হাজার টাকা
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় চাঞ্চল্যকর অমন্ত সেন তংচঙ্গ্যা (৪৬) হত্যার ঘটনায় রোয়াংছড়ি উপজেলার নাথিং ঝিরি পূর্নবাসন পাড়ার বাসিন্দা রাজন্ত তংচঙ্গ্যা (২৩) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা পুলিশের আয়োজনে জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন পুলিশ সুপার মো.শহিদুল্লাহ কাওছার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
এসময় পুলিশ সুপার বলেন, অমন্ত সেন তংচঙ্গ্যা (৪৬) পেশায় একজন ইজিবাইক (টমটম) চালক ছিলেন। সে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোয়াংছড়ি স্টেশন ও তার আশপাশের এলাকায় ইজিবাইক চালাতেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার ইজিবাইকটি তার ভাইয়ের বাসায় চার্জে দিয়ে তার বাসায় যাওয়ার কথা বলে চলে যায়, কিন্তু পরদিন সকাল পর্যন্ত সে বাসায় না ফেরায় তার পরিবারের সদস্যরা রোয়াংছড়ি থানায় একটি নিখোঁজ সংবাদ প্রদান করে।

পরে পুলিশের সাথে অমন্ত সেন তংচঙ্গ্যা এর আত্মীয় স্বজন মিলে তাকে খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে তারাছা খাল সংলগ্ন বাঁশঝাড়ের নিচের কাঁচা সড়কের উপর কাদা মাখা অবস্থায় তার কাপড়ের ব্যাগ ও মোবাইল পাওয়া যায় এবং তাকে টেনে নিয়ে খালে নেওয়ার ছাপ বালিতে পাওয়া যায়, সেই স্থানে রক্ত মাখা অবস্থায় দুইটি কাঁচা বাঁশের বড় কঞ্চিও একটি ভাঙ্গা গাছের টুকরা পাওয়া যায়, এছাড়াও ঘটনাস্থলে প্রচুর রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায়। রোয়াংছড়ি থানা পুলিশ সেই আলামতগুলো জব্দ করে এবং ভিকটিমকে খোঁজাখুঁজির সর্বোচ্চ প্রচেষ্ট অব্যাহত রাখে। পরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বান্দরবানের ক্যাচিংঘাটা এলাকার সাঙ্গু নদীর কিনারায় পানির উপর ভাসমান অবস্থায় অমন্ত সেন এর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনার পর ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন আসামি রাজন্ত তংচঙ্গ্যাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি স্বীকার করে মুনাফা দেয়ার শর্তে সে ভিকটিম অমন্ত সেনকে মোট ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছিল, কিন্তু ৮ মাসেও ভিকটিম তাকে কোন টাকা দেয়নি, আর তাই অমন্ত সেনকে রাতের আধারে আটক করে মাথার পেছনের দিকে সজোরে আঘাত করলে সে মারা যায়। তারপর তার লাশটি টেনে নিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী তারাছা খালের পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়।
পুলিশের আইনী কার্যক্রম শেষ করে শনিবার আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.আবদুল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মান্না দে, রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম সাকের আহমেদসহ পুলিশের বিভিন্ন উর্ধতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।



