লামায় ইউপি সদস্য ও স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ
গাছ, পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি ও নির্মাণ সামগ্রী লুটপাটের অভিযোগ
বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় স্থানীয়দের খতিয়ানভুক্ত জায়গা জবরদখল, সৃজিত বাগানের কয়েক লক্ষ টাকার গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া, জোরপূর্বক পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি ও নির্মাণ সামগ্রী লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ বুধবার দুপুরে লামা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার মূলহোতা মো. নাছির উদ্দিন ও তার সহযোগী মো. ইয়াছিন মাষ্টারের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ জায়গার মালিক এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী মো. রফিক।
এ সময় ভুক্তভোগী মো. জসিম উদ্দিন, আলতাফ মিয়া, নজরুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, আনোয়ারা বেগম, জাহেদ হোসেন, হায়না আলম, ফরিদ আলম ও আবু তাহের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত নাছির উদ্দিন সরই ্ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সহযোগী মো. ইয়াছিন কম্পনিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. রফিক ও মো. জসিম উদ্দিন উল্লেখ করেন, আমরা দুই ভাই মো. রফিক ও জসিম উদ্দিনের নামে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের কম্পনিয়া এলাকায় খতিয়ান নং ৩৮ এবং আর হোল্ডিং ১৫০৭ মূলে ৭ একর জায়গা সরকারীভাবে রেকর্ডভুক্ত আছে। দীর্ঘদিন ধরে এ জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতি গাছের বাগান ও বাগানবাড়ি করে ভোগদখলে আছি। এ জায়গার উপর কম্পনিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। আমাদের জায়গায় জোরপূর্বক স্কুল স্থাপন করলেও এলাকার স্বার্থে এবং শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে বিষয়টি আমরা মেনে নিই। ভূমি রেকর্ডপত্র ও দীর্ঘদিনের ভোগদখলের সূত্রে এই জায়গার মালিক আমরা দুই ভাই। কিন্তু সরই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. নাছির উদ্দিন ও তার সহযোগী মো. ইয়াছিন মাষ্টার কোনভাবে আমাদের নামীয় জায়গা স্বীকার না করে নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবী করে আমাদেরকে বিভিন্ন হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছেন। শুধু তায় নয়, ইউপি সদস্য মো. নাছির উদ্দিন এবং তার সহযোগী কম্পনিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক মো. ইয়াছিন বিদ্যালয়ের পাশের পাহাড় কেটে প্রায় ৫০০ গাড়ি মাটি বিক্রি করেন। বিদ্যালয়ের পাশঘেঁষে ২০-২৫ ফুট উচু মাটি কাটায় বর্তমানে ঝুঁকিতে পড়েছে স্কুল ভবনটি। যে কোন পাহাড় ধসে বিদ্যালয়ের উপর পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
ভুক্তভোগী মো. রফিক ও মো. জসিম উদ্দিন আরও বলেন, আমাদের জায়গা থেকে কয়েক লক্ষ টাকার গাছ দিনেদুপুরে কেটে নিয়ে গেছে নাছির উদ্দিন মেম্বার ও ইয়াছিন মাস্টার। এইসব নিয়ে কথা বলায় নাছির উদ্দিন মেম্বার বিগত সরকারের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা হওয়ায় আমাদের নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা প্রশাসন, বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তর ও লামা থানাকে অনেকবার অবগত করেছি, কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। সম্প্রতি আমাদের জায়গার উপর ভবন নির্মাণের জন্য ৮ হাজার ইট ও কিছু মালামাল নিয়ে রাখি। রাতের আধাঁরে এইসব মালামাল নিষে যায় নাছির উদ্দিনরা। তাই আমাদের বিভিন্ন নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে সাংবাদিক সমাজের মাধ্যমে সহযোগিতা কামনা করছি।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মো. নাছির উদ্দিন মেম্বার বলেন, সমাজের কিছু দুস্কৃতিকারী ইয়াছিন মাস্টার ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে মানহানি ও হয়রানি করছেন। দুস্কৃতিকারী নিজেরাই পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে এখন রক্ষা পেতে আমাদের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।