এবার এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। কক্সবাজারসহ আশপাশ এলাকায় চলছে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। চলমান ঘূর্ণিঝড়টি আজ শনিবার অথবা কাল রবিবার চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এসময় এর গতিবেগ ঘন্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটারের বেশি হতে পারে। এতে কক্সবাজার জেলার পর সবচেয়ে বেশি প্রভাব বান্দরবানের লামা উপজেলায় বেশি দৃশ্যমান হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের এমন সংকেতে এ দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন।
দূর্যোগকালীণ সময় উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের ৫২টি বিদ্যালয়কে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণার পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়। এতে ৯জন কর্মকর্তা শনি, রবি ও সোমবার -এ তিন দিন জনসাধারণের সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব পালন করবেন। দূর্যোগকালীন সময় কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের মোবাইল নম্বর সমূহ হলো- ০১৬৭৬৪৮২৮৩৬ (সুব্রত দাশ, সহকারী প্রোগ্রামার), ০১৯১৫৯২৭৮১৮ (খন্দকার তৌহিদ,সহকারী তথ্য অফিসার), ০১৭১২০৮১৮৭৬ (আবু হানিফ, উপজেলা প্রকৌশলী), ০১৮১১৯৮৬৬০৫ (মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা), ০১৮১৮৭৮৮৫৪১ (গোপাল কৃষ্ণ চক্রবর্তী, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা), ০১৭১৮৩৩৯৪৮৩ (মো.মনিরুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা), ০১৮১৫৩৩৩২৪০ (মো. সেলিম হেলালী, খাদ্য নিয়ন্ত্রক), ০১৮২৯৩৩১৪৬২ (মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, ব্যবস্থাপক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক), ০১৮৪০০২৭৭৭০ (আবু নোমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার)।
এ উপলক্ষে নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সারের সভাপতিত্বে দূর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি সভায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল, পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম,পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ফাতেমা পারুল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহেদ উদ্দিন, সহকারী তথ্য অফিসার খন্দকার তৌহিদ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ রোবীন সহ উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
দূর্যোগের সময় ৫২ অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিতদের জন্য শুকনো খাবার, দিয়াশলাই ও মোমবাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে দূর্যোগ মোকাবেলায় ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলায় ৫মে.টন চালও বরাদ্ধ পাওয়া গেছে।
ঘুর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়ে লামা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল বলেন, যেসব স্থানে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাধারন মানুষের জান ও মালের ক্ষতিসাধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সব স্থান ছেড়ে কাছাকাছি বেসরকারী-সরকারী স্কুলগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য স্থানীয়দের জানিয়ে দিতে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বলা হয়েছে। আশা করি সবাই সচেতন হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।
লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানায়, দূর্যোগকালীন সময় ৫২টি বিদ্যালয় খোলা রাখার নির্দেশনা পেয়েছি। দূর্যোগের সময় অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে বিদ্যালয় খোলা রাখা হবে। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, রেডক্রিসেন্ট, বিদ্যুৎ সহ আইনশ্খৃংলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার।