লামায় জায়গা বিক্রিতে সাহা আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

বান্দরবানের লামা উপজেলায় সাহা আলম নামের এক হোল্ডিং মালিকের বিরুদ্ধে জায়গা বিক্রিতে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজ নামীয় হোল্ডিং এর জায়গা দুই ধাপে ৮ জনের কাছে বিক্রির মাধ্যমে এ প্রতারণা করেন তিনি।

সাহা আলম উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পাড়ার বাসিন্দা মৃত আশরাফ আলীর ছেলে। তার প্রতারণার কারণে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্টের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তারা এ ঘটনায় প্রতারক বিক্রেতা সাহা আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী তুলেছেন।

অভিযোগ জানা যায়, লামা উপজেলার চাম্বি মৌজায় আর ২৮৫ নং হোল্ডিং মূলে সাহা আলম ৪ একর পাহাড়ি জায়গা বন্দোবস্তি পায়। নগদ টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় সাহা আলম এ জায়গা থেকে তিন একর আশি শতক ২ লাখ টাকায় ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর পাশের বাসিন্দা মো. কালু মিয়ার ছেলে আবুল কাশেমের কাছে বায়না নামা মূলে ছাফ বিক্রি করে দেন। ক্রয়কৃত জায়গার দখল বুঝে নিয়ে তথায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে বসবাসের পাশাপাশি আবুল কাশেম মিউটেশন মামলা রুজু করে ৬৭ (ডি) ২০২১ মোকদ্দমা মূলে নিজের নামে নামজারি করে নেন। ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর হোল্ডিং মালিক সাহা আলম প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গোপনে একই হোল্ডিং এর জায়গা ফের জনৈক খোরশেদ আলম, মোরশেদ আলম সিদ্দিকি, দিদারুল আলম, মুহাম্মদ কামরুল বয়ান, ফার্সি আলম, সম্রাট আলম মোস্তফা ও ইকবালের কাছেও বায়না নামামূলে বিক্রি করেন, কিন্তু জায়গার দখল বুঝিয়ে দিতে পারেননি। পরবর্তীতে বায়না নামার বলে দ্বিতীয় ক্রেতারা আবুল কাশেমের জায়গা জবর দখলের চেষ্টা শুরু করেন।

NewsDetails_03

শুধু তায় নয়, দ্বিতীয় ধাপের ক্রেতারা আবুল কাশের সাথে না পেরে পাশের আলী আহমদের ৭০৭ নং হোল্ডিং এর জায়গা জবর দখলের চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে হোল্ডিং মালিক আলী আহমদের ছেলে মো. শফিক ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খোরশেদ আলম, মোরশেদ আলম সিদ্দিকি, দিদারুল আলম, মুহাম্মদ কামরুল বয়ান, ফার্সি আলম, স¤্রাট আলম মোস্তফা ও ইকবালকে বিবাদী করে ১৪৫ ধারায় একটি ফৌজদারী অভিযোগ করেন। বর্তমানেও তারা জাযগা জবর দখলের জন্য মামলা হামলা অব্যাহত রেখেছেন। মামলা হামলা ও জায়গা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাস্তক্ষেপ কামনা করেন আবুল কাশেম ও শফিক।

তবে হোল্ডিং মালিক সাহা আলম বলেন, আমি আবুল কাশেমের কাছে জায়গা বিক্রি করিনি। উল্টো আবুল কাশেম প্রতারণা করে জমি নামজারী করে নিয়েছেন। এদিকে অভিযুক্তদের মধ্যে খোরশেদ আলম জানায়, সাহা আলম কর্তৃক আবুল কাশেমের কাছে জমি বিক্রির বিষয়টি আগে জানতাম না। পরে জেনেছি। আমরা ষাহা আলম থেকে যে জায়গা কিনেছি, সেটা চৌহদ্দী মতে আলী আহমদের ৭০৭নং হোল্ডিং এর পাশে। আলী আহমদের হোল্ডিং এ দুই চৌহদ্দীতে চার একর জায়গা থাকলেও তার ছেলে মো. শফিক এ পর্যন্ত বিভিন্ন জনের কাছে ১২ একরের মত জায়গা বিক্রি করেছেন। বর্তমানে আমাদের ক্রয়কৃত জায়গা নিয়ে ঝামেলা করছেন শফিক।

এ বিষয়ে আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছৈয়দ নুর সহ স্থানীয় সাহেব আলী ও বশির আলম সহ অনেকে জানান, ২০১৯ সালে সাহা আলম নিজ হোল্ডিং এর তিন একর আশি শতক জায়গা আবুল কাশেমের কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু ২০২৩ সালে এসে শুনতেছি একই হোল্ডিং এর জায়গা নাকি আবারো বিক্রি হয়েছে। এক জায়গা দুই পক্ষের কাছে বিক্রি করে সাহা আলম প্রতারণা করেছেন। যা মোটেও কাম্য নয়। বর্তমানে এ জায়গা নিয়ে দ্বিতীয় ধাপের ক্রেতারা একেক বার একেক হোল্ডিং এর জায়গা জবর দখলের চেষ্টা করছেন, মামলা হামলা করছেন। এতে যে কোন মুহুর্তে এলাকার শান্তিু শৃঙ্খলা বিনষ্টের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তারা।

আরও পড়ুন