লামায় পাহাড় সাবাড় করে চেয়ারম্যানের কটেজ
কুম্ভকর্ণের ঘুম পরিবেশ অধিদপ্তরের !
বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং সড়কের পাশে পরিবেশ আইন অমান্য করে পাহাড় কেটে কটেজ নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে লামা উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি, গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মারমা বিরুদ্ধে। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই কয়েকদিন ধরে এক্সকাভেটর ও শ্রমিক দিয়ে একর জুড়ে নির্বিচারে কাটছেন পাহাড়। প্রকাশ্যে পাহাড় কাটলেও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো আইনি ব্যবস্থা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পাহাড় ধ্বংস করে এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মার্মা। চারিদিকে সবুজ অরণ্যের বনাঞ্চল ধ্বংসের পর উচুঁ পাহাড়কে কেটে সমতল করা হয়েছে। এমনকি পাহাড় কেটে পাহাড়কে বিভক্ত করে পাহাড়ের মাঝে তৈরী করা হয়েছে সড়ক পথ।
আরো জানা গেছে, লামা-ফাইতং সড়কের ৮ কিলোমিটার নামক স্থানে সড়ক ঘেষে বদর টিলা নামক একটি বিশাল পাহাড়। সে পাহাড়ের উপর কটেজ নির্মাণের প্রস্তুুতি নিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা। পাহাড় কেটে মাঠ তৈরীর পাশাপাশি সেখানে উচুঁ পাহাড় কেটে সমতল করে স্থাপন করেছে একটি বাঁশের কটেজ। পাহাড়কে সমতলে পরিণত করতে প্রতিদিনই কাজ করছেন আট থেকে নয়জন শ্রমিক। প্রায় কয়েকদিন যাবত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী পাহাড় কেটে চলেছেন শ্রমিকরা, এখনো সেটি চলমান।
এই বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার জানান, ঘটনাস্থলে উপজেলা প্রশাসনের একটি অভিযান পরিচালনা করে মাটি কাঁটার যন্ত্র নষ্ট করেছে। ঘটনাস্থলে কেউ উপস্থিত না থাকায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানিয়ে শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মার্মা’র নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন তারা ৬শ টাকা বেতনে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে পাহাড় কেটে কটেজ স্থাপন করা হবে।
এই বিষয়ে লামা উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মার্মা বলেন, আমি পাহাড় কাটেনি’ উচুঁ পাহাড়কে সমান করার জন্য সমতল করা হয়েছে। কয়েক দশক আগে সেখানে রাস্তাও ছিল, সেখানে পরিদর্শনে এসেছে লামা উপজেলার ইউএনও।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুযায়ী, পাহাড় কাটা আমলযোগ্য অপরাধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনও সরকারি, আধা-সরকারি, সায়িত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি পাহাড় কাটতে বা নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। যদি কেউ এটি অমান্য করে, তবে তাকে অথবা ওই প্রতিষ্ঠানকে দুই বছর কারাদণ্ড অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। ফের একই অপরাধ করলে, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১০ বছর কারাদণ্ড অথবা ১০ লাখ জরিমানা গুণতে হবে।
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ফখর উদ্দিন বলেন, সরজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে,পাহাড় কাটার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।