লামায় বৃদ্ধ বিধবা অমিয় বসাকের বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাট : আহত ৬
জায়গা জবর দখলে ব্যর্থ হয়ে বান্দরবানের লামায় অমিয় বসাক নামের এক বৃদ্ধ বিধবা নারীর বসতঘরে প্রতিপক্ষ স্বপন দে’রা ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তায় নয়, ভাংচুর ও লুটপাটে বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় অমিয় বসাকসহ ৩ নারী সহ ৬ জন আহত হন। আহতরা হলেন, মেরাখোলা হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা মৃত মনোরঞ্জন বসাসের স্ত্রী অমিয় বসাক (৬৫), ছেলে অমর বসাক (৪২), সমর বসাক (৩৫) ও অশোক বসাক (৩০), পুত্রবধূ প্রিয়াংকা (৩২) ও মেয়ে কৃষ্ণা বসাক (৩৩)। এ ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী স্বপন দে মেরাখোলা হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা মৃত নান্টু দে’র ছেলে। জায়গা জবর দখল চেষ্টা ও একের পর এক হামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বৃদ্ধ অসহায় বিধবা অমিয় বসাক।
অভিযোগে জানা যায়, লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা মনোরঞ্জন বসাকের নামে লামা মৌজার ৮৭নং হোল্ডিং এর ১২৫২ ও ১২৫৫ নং দাগ মূলে ৫০ শতক জায়গা রয়েছে। দীর্ঘ ৩০-৩৫ বছর আগে থেকে মনোরঞ্জন বসাক এ জায়গায় বসতঘর নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। ২০১৪ সালে মনোরঞ্জন বসাক মারা যাওয়ার পর স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েরা এ জায়গা ভোগ করে করছেন। মূল্য বেড়ে যাওয়ায় গত তিন বছর আগে এ জায়গার উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পাশের মৃত নান্টু দে’র ছেলে স্বপন দে’র। এ জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য স্বপন দে’রা বিভিন্ন সময় হুমকিও প্রদান করেন। এ প্রেক্ষিতে অমিয় বসাকরা গত ২৯ জুন স্বপন দে’র বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এর জের ধরে ১১ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে স্বপন দে’র নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন সংঘবদ্ধ হয়ে অমিয় বসাকের বসতঘরে ঢুকে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় বাধা দিলে স্বপন দে’রা মনোরঞ্জনের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও পুত্রবধূকে বেধম মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরদিন উল্টো বৃদ্ধ অমিয় বসাক পরিবারের অন্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে একটি মামলা করেন স্বপন দে’রা। সর্বশেষ গত ১৬ ডিসেম্বর রাত দুইটার দিকে স্বপন দে’র নেতৃত্বে ২০-২৫জন অমিয় বসাকের ঘরে ঢুকে ভাংচুর ও লুটপাট করে। এরপর বাহিরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে বসতঘরের পাশের আরেকটি টিনের ঘর ভাংচুর করে মালামাল লুটে নিয়ে যায়। পরে আমিয় বসাকরা নিজেদেরকে রক্ষার জন্য ৯৯৯ নম্বরে রিং দিলে হামলাকারীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী বৃদ্ধ বিধবা অমিয় বসাক বলেন, আমার স্বামীর রেখে যাওয়া বসতভিটার পঞ্চাশ শতক জায়গা ছাড়া আর কিছু নেই। প্রতিপক্ষ স্বপন দে’রা এ জায়গাটুকুও জোর করে দখলে নিতে একের পর এক ভাংচুর লুটপাট ও মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। আমার বসতভিটার জায়গা রক্ষাসহ মামলা, হামলা ও হুমকি থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তবে অমিয় বসাকের বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট বলে জানান স্বপন দে’রা। তারা বলেন, আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য তারা এ ফন্দি করছে।
এদিকে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে স্থানীয় বাবলা, মো. রাজ্জাক ও সাজু বসাক জানায়, এতদিন জানতাম মনোরঞ্জন বসাকের জায়গা, মনোরঞ্জন মারা যাওয়ার পর সম্প্রতি এ বসতভিটার জায়গা স্বপন দে’রা দাবী করেন। এ নিয়ে অমিয় বসাকদের বসতঘর ভাংচুর লুটপাট করেন স্বপন দেরা। ঘটনাটি খুবই অমানবিক।
বৃদ্ধ বিধবা অমিয় বসাকের বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা শুনেছেন বলে জানান, লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম।