লামায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসার দাবি স্থানীয়দের

purabi burmese market

সারাদেশে যখন করোনা ভাইরাসের আতংক বিরাজ করছে সে মুহুর্তে বান্দরবানের লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৫জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি সম্প্রদায়ের শিশু,নারী ও পুরুষ লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। বিষয়টিকে জরুরীভাবে নজর দেয়ার পাশাপাশি তাদের উন্নত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলার কথা বলছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ।

গত ১৩ মার্চ শুক্রবার অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ায় দুতিয়া ম্রো (৮) নামে এক শিশুর মুত্যু হয়। এসময় সেই পাড়ায় অধিকাংশ শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই খবরটি স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে আসে।

পরে ১৬ মার্চ (মঙ্গরবার) বিকেলে লামা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার গহীনে অবস্থিত পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ায় সেনাবাহিনী, সাংবাদিক,স্থানীয় চেয়ারম্যান ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে তাদের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে ভর্তি করানো হয়, ভর্তিকৃতদের মধ্যে ২৫ জন ম্রো শিশু ও ১০ জন কিশোর কিশোরী রয়েছে। এদিকে অসুস্থদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হলে ও রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে চিন্তিত স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা।

বান্দরবানের লামা উপজেলার সংবাদকর্মী খগেশ চন্দ্র পতি জানান, আমরা এমন রোগ দেখে আতংকে রয়েছি, সারাদেশে যখন করোনার প্রভাব তখন এই অজানা রোগ আমাদের আতংকের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন,আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই দ্রুত আক্রান্তদের এই রোগ নির্ণয় করা এবং প্রতিষেধক দিয়ে সুস্থ করে তোলা।

dhaka tribune ad2

হাসপাতালে ভর্তি হ্লেংপাউ ম্রো এর পিতা মিনজা ম্রো বলেন,আমরা অনেক কষ্টে আছি, ডাক্তাররা আমাদের অনেক সেবা দিচ্ছে কিন্তু রোগ নির্ণয় না হওয়া আর সন্তানকে হাসপাতালের বেডে শুয়ে চিকিৎসা দিতে আমাদের কষ্ট পোঁহাতে হচ্ছে, আমি চাই আমার সন্তানের মত আর কেউ যেন এই রোগে না ভোগে।

এদিকে ১৮ মার্চ (বুধবার) বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু মারমা,বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সিং ইয়ং ম্রোসহ একটি মেডিকেল টিম অসুস্থতদের দেখতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন, তারা সেখানে তাদের খোঁজখবর নেন এবং আক্রান্তদের উন্নত চিকিসা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।

এদিকে অজ্ঞাত রোগে ৩৫ জন ভর্তি হওয়ার পরপরই তাদের চিকিৎসা দেয়া শুরু করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা,তবে কি কারণে হঠাৎ একটি পাড়াতে এতজন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে তা সঠিকভাবে বলতে না পারলে ও প্রাথমিকভাবে হামের লক্ষণ হিসেবে এই রোগকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়ে আরো উন্নত চিকিৎসা প্রদানের কথা জানালেন লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমর্কতা ডা: মোহাম্মদুল হক ।

তিনি জানান,আমরা রোগীগুলো ভর্তির পরপরই সেবা দিচ্ছি,আশাকরি তারা দ্রুত ভালো হয়ে যাবে।

এদিকে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু মারমা বলেন, আমরা ভর্তিকৃতদের সার্বিক মনিটরিং করে যাচ্ছি, তাদের রক্তের নমুনা ঢাকায় চেকআপের জন্য পাঠানো হয়েছে। রির্পোট আসা মাত্রই আমরা সেই অনুযায়ী পরর্বতী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি দ্রুততম সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত অসুস্থ রোগীদের পাশাপাশি পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ায় বসবাসরত বাসিন্দাদের জরুরী ভিত্তিতে আরো উন্নত সেবা প্রদান করা করা জরুরি,অন্যথায় ওই এলাকায় আরো অধিক সংখ্যক জনসাধারণ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।