বান্দরবানের লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সাপমারা ঝিরি গ্রামের বাসিন্দা শাহ জাহানের মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ আশপাশের মানুষ। নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় খামারটি স্থাপন করা হয়েছে। এতে করে আশপাশের বাসিন্দারা থাকতে পারছেন না বসতঘরে। ইতিমধ্যে বিষ্ঠার দুর্গন্ধে শিশুসহ ৩জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
খামারের আশপাশের বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী নুর মোহাম্মদ মঙ্গলবার বিকালে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। অতিদ্রুত প্রতিকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
অভিযোগে জানা যায়, এক বছর আগে নুরু ছালামের ছেলে শাহ জাহান বসতঘর নির্মাণের নাম করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় লম্বা একটি ঘর নির্মাণ করেন। পরে আশপাশের লোকজনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে ওই ঘরে মুরগির বাচ্চা তুলেন। বর্তমানে খামারে শতশত মুরগি রয়েছে। এসব মুরগির বিষ্ঠার কারণে অসহনীয় দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। দুর্গন্ধে খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন ভুক্ত হতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয়, এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না বলে নীতিমালায় উল্লেখ আছে।
ভুক্তভোগী নুর মোহাম্মদ বলেন,‘আমার বসতঘরসহ আরো ৮ বসতঘর সংলগ্ন খামারটির অবস্থান। বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। আশপাশে থাকা ওই পরিবারের সদস্যদের পক্ষে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’ বিষ্ঠার দুর্গন্ধে ইতিমধ্যে আমার ছেলে, ছেলের বউ ও এক মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
খামারটির আশপাশে মুরগির বিষ্ঠা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। খামারের চারপাশে বসতবাড়ি। এসব বাড়ি থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তারা আরো বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় স্থাপিত খামারের বিষয়ে একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেও কোন সূরাহা হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে খামারের মালিক শাহ জাহান বলেন, খামারটি নিয়মিত পরিষ্কারের পাশাপাশি স্প্রে করা হচ্ছে যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়। নুর মোহাম্মদের অভিযোগ সত্য নয়, সম্পুর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মাধবী লতা আসাম জানান, মুরগির খামারের বিষযে এলাকাবাসী মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে বুধবার সরজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ ইসহাক আলী বলেন, কেউ নীতিমালা লঙ্ঘন করে মুরগির খামার গড়ে তুললে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।