লামায় আত্মসাথের মামলা খালাসে সহযোগিতা না করায় ধর্ষণ মামলার আসামী হলেন চেয়ারম্যান !
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি কুচক্রী মহল আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক মান সম্মান ক্ষুন্ন করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের হীন উদ্দেশ্যে মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক নারী নির্যাতনের মত মামলার অবতারণা করেছেন বলে জানিয়েছেন,বান্দরবানের লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ছাচিংপ্রু মার্মা।
বান্দরবানের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে এক নারীর ধর্ষণ মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার সকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় মামলায় উল্লেখিত স্বাক্ষী ও পরিষদের সদস্য শফিউল আলম ও আবু তাহেরসহ মামলার অপর বিবাদী আবদুল মন্নান উপস্থিত ছিলেন।
চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা আরো জানান, প্রকৃত পক্ষে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ধর্ষণ মামলার বাদীর কথিত স্বামী মো. বেলাল উদ্দিন পরিষদের একজন চৌকিদার ছিলেন। গত বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণকালীন সময়ে সহায়তা বাবদ ২৫০০ টাকা হারে মোবাইলের মাধ্যমে স্থানীয়দের প্রদান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। চৌকিদার বেলাল উদ্দিন কৌশলে অসংখ্য মানুষের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লামা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। পাশাপাশি সাংবাদিকরা এ বিষয়ে তদন্ত করে পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বিধি মোতাবেক পরিষদের সিদ্ধান্ত ক্রমে তাকে চৌকিদারের পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়।
বাদীর স্বামী বেলাল উদ্দিন কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে মামলা করার বিষয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে দায়ী করেন এবং মামলা থেকে তাকে খালাস ও স্বপদে বহাল করার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা চান। বিষয়টি যেহেতু আইনী, সেহেতু আমি সহযোগিতা করতে অপারগতা প্রকাশ করায় চৌকিদার বেলাল উদ্দিন আমার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিপক্ষের যোগসাজসে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে স্ত্রীকে বাদী করে গত বৃহস্পতিবার আদালতে একটি সাজানো ধর্ষণ মামলা করেন। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। মামলাটি তদন্তের জন্য বান্দরবান সিআইডি’র অফিসার ইনচার্জ বরাবরে প্রেরণ করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
এদিকে মামলায় উল্লেখিত স্বাক্ষী ও পরিষদের সদস্য শফিউল আলম জানায়, মামলার বাদী কর্তৃক রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। না জানিয়ে মামলায় আমাকে কেন স্বাক্ষী দেয়া হয়েছে তাও বোধগম্য নয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, বাদী অন্য জনের স্ত্রী ও তিন সন্তানের মা হওয়া সত্বেও চৌকিদার মো. বেলাল উদ্দিনের সাথে দীর্ঘদিন স্বামী স্ত্রী হিসেবে অনৈতিকভাবে বসবাস করে আসছেন। এসব অনৈতিক কারণে ইতিমধ্যে মামলার বাদী ওই নারীকে এলাকাবাসী সমাজচ্যুত করেছেন।
এদিকে পরিষদের সদস্য আবু তাহের বলেন, মামলা খালাসের বিষয়ে চৌকিদার বেলাল উদ্দিন ও তার কথিত স্ত্রীকে নিয়ে বেশ কয়েকবার আমার কাছে এসেছিলেন এবং চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। চেয়ারম্যান সহযোগিতা না করায় ওই নারী ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নারী নির্যাতন আইনে চেয়ারম্যানসহ দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে শুনেছি। মামলার বাদী বলেন, মামলায় উল্লেখিত অভিযোগ সত্য।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, থানার দরজা সবার জন্য খোলা, এখানে সবাই সমান। তাছাড়া অভিযোগ নিয়ে ওই নারী কখনো থানায় আসেনি। পুলিশ মামলা নেয়নি-একথা মোটেও সত্য নয়।