লামায় ইয়াংছা খালের ভাঙ্গনের মুখে ৩৫ পরিবার
বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন খাল ও ঝিরির পানির স্রোত তীব্র আকার ধারণ করে। আর এ স্রোতের তীব্রতার কারণে ইয়াংছা খালপাড়ে অবস্থিত ছোটপাড়া নামের একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি পাড়া ভাঙ্গনের কবলে পড়ে।
সম্প্রতি কয়েকদিনের টানা বর্ষনের ফলে খাল ভাঙ্গনে পাড়ায় উঠার একটি সিঁড়ি ও ৬ একর ফসলি জমি খালে বিলীন হয়ে গেছে। অল্পদিনের মধ্যে বসতঘর হারানোর ভয়ে আতংক ও চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন পাড়ার ৩৫ পরিবারের মানুষ। বছর বছর এ খালের ভাঙ্গনে ছোট হয়ে আসছে ছোট পাড়ার পরিধি। এ বসতভিটা ছেড়ে অন্য কোথাও আশ্রয় নেওয়ার মত জমিও নেই পাড়াবাসীর। তাই এটি রক্ষায় দ্রুত ব্লক বাঁধ নির্মাণে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন ছোটপাড়াবাসী।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার জনবসতি গড়ে ওঠার প্রথম দিকে ইয়াংছা খালের তীরবর্তী এলাকায় বসবাস শুরু করেন মার্মা সম্প্রদায়ের লোকজন। বর্তমানে এ পাড়ায় ৩৫ পরিবারের প্রায় দেশ শতাধিক মানুষ বসববাস করছেন। খালের নাব্যতা হ্রাসের কারণে এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি বৃদ্ধি পায়। আর এতে পানির তোড়ে তীব্র ভাঙ্গনে বছর বছর সংকুচিত হচ্ছে পাড়াসহ এলাকার পরিধি। শুধু তাই নয়, অব্যাহত ভাঙণের মুখে প্রতি বছর খালের তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। চলতি মৌসুমে আবারো টানা বর্ষণ হলে তলিয়ে যেতে ছোটপাড়ার ৩৫টির মত বসতঘর, কয়েক একর ফসলি জমি ও একটি বিদ্যুতের খুঁটি।
এ বিষয়ে ছোটপাড়ার বাসিন্দা উথোয়াইচিং, অংবাই মার্মা, অংক্যহ্লা মার্মাসহ অনেকে জানান, সম্প্রতি কয়েক দিনের টানা বর্ষণের ফলে বিভিন্ন জনের ৬ একর ফসলি জমি ও এডিবি কর্তৃক প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সিঁড়ি খালে বিলীন হয়ে গেছে।
তাছাড়া পাড়া কারবারী অংসিপ্রু মার্মাসহ আরো অনেকে এক সূরে জানায়, টানা বর্ষণ শুরু হলে পাড়ার লোকজন আতংকে থাকেন, কখন না খালের ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি খালে বিলীন হয়ে যায়। এ বসতভিটা ছেড়ে অন্য কোথাও আশ্রয় নেওয়ার মত জমিও নেই তাদের। তাই দ্রুত খালটি ভাঙ্গন রোধে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
ইয়াংছা খাল ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আপ্রুচিং মার্মা বলেন, ইয়াংছা খালের ভাঙ্গনে পাড়ার ৩৫টির মত বসতবাড়ি, একটি বিদ্যুতের খুঁটি সহ ফসলি জমি ভাঙ্গনের মুখে আছে। পাড়াসহ এলাকাটিকে রক্ষা করতে হলে বড় বাজেটের প্রয়োজন। ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য বরাদ্দে সমস্যা সমাধান হবে না।
এদিকে ছোটপাড়াটি রক্ষায় ব্লক বাঁধ নির্মাণের জন্য পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র সু-দৃষ্টি কামনা করে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার জানায়, মার্মা সম্প্রদায়ের লোকজন প্রায় শতবছর ধরে ছোটপাড়ায় বসবাস করে আসছে। কিন্তু বর্ষায় ইয়াংছা খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে খাল ভাঙ্গনের কবলে পড়ে পাড়ায় বসবাসরত পরিবারগুলো। চলতি বছরে ৬ একরেরও বেশি জমি ও পাড়ায় উঠার জন্য নির্মিত একটি সিঁড়িও এ খালের ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। তাই খাল ভাঙ্গন রোধ করে পাড়াটি রক্ষা জরুরী হয়ে পড়েছে।
