লামায় একের পর এক বন্য হাতি হত্যা !

NewsDetails_01

বান্দরবানের লামা উপজেলায় একের পর এক বন্য হাতির মৃতদেহ পাওয়ার কারনে হাতিগুলো রোগ আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক ভাবে মারা যাচ্ছে, নাকি হত্যা করা হচ্ছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,গত ৫ নভেম্বর জেলার লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি মৎস্য প্রকল্পের পানিতে ভাসমান অবস্থায় একটি হাতির মৃতদেহ উদ্ধারের মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে আরো একটি বাচ্চা বন্য হাতির মৃত দেহ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার (১৬নভেম্বর) উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী এলাকার দুর্গম পাহাড়ি চাককাটার ঝিরিতে হাতিটির মৃত দেহ পাওয়া যায়। মৃত হাতির বয়স আনুমানিক আড়াই থেকে তিন বছর। অল্প দিনের ব্যবধানে ২টি হাতির মৃত দেহ উদ্ধার হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী এলাকা বাসিন্দা সাবের আলী বলেন, রোগাক্রান্ত হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে, আবার কেউ কেউ বলছেন বিদ্যুতের ফাঁদে পড়ে মারা যায় হাতিটি। একের পর এক হাতির মৃত্যু নিয়ে সর্ব মহলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, শনিবার সকালে কুমারী চাককাটার ঝিরিতে একটি বন্য হাতির মৃতদেহ দেখে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আলমগীর চৌধুরী ও বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। বিভিন্ন সময় গভীর জঙ্গল থেকে খাবারের সন্ধ্যানে লোকালয়ে নেমে হাতির পাল ওই এলাকায় হানা দিয়ে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, মানুষ ও বাগানের ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। এ থেকে রক্ষা পেতে বাগান ও ফসলি জমির চার পাশে প্রায় সময় বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করতেন স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে গত রাতে বুনো হাতির পাল খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নামলে বাচ্চা হাতিটি পাতানো বিদ্যুতের তারের সাথে স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।

NewsDetails_03

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকার অধিবাসিরা বলেন, সম্ভবত হাতির বাচ্চাটি রোগাক্রান্ত ছিল, এতে করে তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে হাতির মৃত্যু সংবাদ পেয়ে বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান, ইউনিয়ন পরিষদ চেযারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার বলেন, মৃত হাতিটির শুঁড়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এটির প্রাথমিক সুরতহাল ও নমুনা সংগ্রহ করে ময়না তদন্তের জন্য সেগুলো চট্টগ্রাম পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে নাকি, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

আরো জানা গেছে, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলার লামা উপজেলার একই এলাকার রহমত উল্যাহর রাবার বাগানে ১টি, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে গজালিয়া ইউনিয়নের হাইমারা ঝিরিতে ১টি, ইয়াংছা এলাকার সেলিমুল হক চৌধুরীর বাগানে ২০০৪ সালে ১টি ও সর্বশেষ গত ৬ নভেম্বর আরো ১টিসহ মোট ৫টি বন্য হাতির মৃতদেহ পাওয়া যায়।

এই ব্যাপারে লামা বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান জানায়, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন