লামায় এত লোকের মাথা ন্যাড়া করার কারণ কী ?

কোভিড-১৯ এ লকডাউনে লামা

NewsDetails_01

করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। একই সঙ্গে সবাই যার যার বাসাবাড়িতে অবস্থান করছেন। ঘরবন্দি মানুষ বিভিন্নভাবে কাটাচ্ছেন অলস সময়। তবে অনেকদিন ধরে ফেসবুকে একটি বিষয় খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। আর তা হচ্ছে মাথা ন্যাড়া করা। এরই ধারাবাহিকতায় গত এক মাসে বান্দরবানের লামা উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন পেশাজীবির পাঁচ শতাধিক শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ মাথা ন্যাড়া করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অনেকে প্রতিদিনই মাথা ন্যাড়া করে ফেসবুকে ছবি প্রকাশ করে চলেছেন। করোনা আতঙ্কের মধ্যে এমন দৃশ্যে মানুষের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। এ ঘোষনার পর থেকে সবাইকে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে তার নিশ্চয়তা নেই। প্রশাসনের নির্দেশে অন্যান্য দোকানপাটের মতো সেলুনও বন্ধ রয়েছে। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে চৈত্র মাসের ভ্যাপসা গরম। মূলত এ সময় মাথার চুল লম্বা হয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন অনেকেই। তাই কেউ কেউ নিজে কিংবা সন্তানদের মাথার চুল ফেলে কেউ বাসায় অবস্থান করছেন, আবার অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন সেই ছবি। এসব দেখে এক কথায় বলা যায়-করোনা আতঙ্কে টাক বা ন্যাড়া হওয়ার ধূম লেগেছে।

এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসের জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের জিয়াউর রহমান আদিব, রিয়াজ উদ্দিন মানিক, উপজেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহীন বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ‘লকডাউন’ চলছে। কবে চুল কাটতে পারব তার ঠিক নেই। তাই চুল সব ফেলে দেওয়াই হচ্ছে উত্তম কাজ। তাছাড়া তীব্র গরমও পড়েছে। তারা আরো জানান, লকডাউনের পর তিন চার দিন ধরে চুল কাটার জন্যে বাজারে ঘোরাঘুরি করেছেন। কিন্তু সেলুন খোলা না থাকায় বাড়িতে বসেই মাথার চুল ফেলে ন্যাড়া হয়েছেন। শুধু তারা নয়- পৌরসভা এলাকার ওমর ফারুক, এম বশিরুল আলম, রাম প্রশাদ, সাইদুর রহমান সাইদ, মো. রিদুয়ানসহ অনেকেই অনেকটা নিরুপায় হয়ে মাথার চুল ফেলে ন্যাড়া করে ফেলছেন বলে জানান।

NewsDetails_03

পৌরশহরে সেলুন দোকানদার বিধু শীল, প্রদীপ কুমার ও জসিম উদ্দিন বলেন, সরকারি ভাবে ঘোষণা দিয়েছেন সবাইকে বাড়িতে অবস্থান করতে। নিত্যপ্রয়োজন দোকান ছাড়া সব কিছু বন্ধ থাকবে। তার কারণে দোকান বন্ধ হলেও পরিচিত দু-একজন ফোন দিলে বাড়িতে গিয়ে চুল কেটে দিয়ে আসছি। বেশিভাগ মানুষ এখন ন্যড়া হয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় ওমর ফারুক রুবেল জানান, তিনি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরেই সময় কাটাচ্ছেন। দিনের বেলা ঘর থেকে বের হয়ে উঠান কিংবা বাগানের বাহিরে কোথাও যাচ্ছেন না। এই সুযোগে তিনি মাথা ন্যাড়া করেছেন। মাথার চুল নিয়ে একেক মানুষের একেক রকম সমস্যা থাকতে পারে। কারো খুশকি নিয়ে, কারো মাথার চুল পড়া নিয়ে আবার কারো কারো চুল ঠিকমতো বাড়ছে না কিংবা প্রচন্ড গরমে অস্বস্তি এমন সমস্যায় ভূগতে পারেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ রবীন বলেন, মাথা ন্যাড়া করার মধ্যে স্বাস্থ্যগত উপকারীতা নেই। তবে খুশকি নিয়ে, মাথার চুল পড়া নিয়ে আবার কারো কারো চুল ঠিকমতো বাড়ছে না কিংবা প্রচন্ড গরমে অস্বস্তি এমন সমস্যায় মাথা ন্যাড়ায় কিছুটা উপকার পেতে পারেন।

আরও পড়ুন