লামায় এবার স্বাস্থ্য বিধি মেনেই শুরু দুর্গাপুজা
মহালয়ার মধ্য দিয়ে গত ১৭ অক্টোবর ক্ষণগণনা শুরু হয়েছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার। এর পাঁচ দিন পর বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দিনগত রাতে শ্রীশ্রী ষষ্ঠী পুজার মাধ্যমে বান্দরবানের লামা উপজেলায় শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। তবে এবার প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজার আয়োজন করতে হয়েছে বলে জানান পুজা কমিটির নেতৃব্ন্দৃরা।
এ পুজাকে কেন্দ্র করে এখন হিন্দু ধর্মালম্বী পাড়া, মহল্লা ও ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের আমেজ। ৫ দিনের পুজা শেষ হবে ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে। ইতিমধ্যে পুজা পালনের জন্য প্রত্যেক মন্ডপে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতাও করা হয়। এদিকে উৎসব যেন সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পালন করতে মন্ডপগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা যায়, প্রতি বছরের মত এবারও উপজেলার একটি পৌরসূভা ও সাতটি ইউনিয়নে পুজা মন্ডপের সংখ্যা ৮টি। তম্মধ্যে পৌরসভা এলাকায় দুইটি, লামা সদর ইউনিয়নে একটি, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে চারটি, আজিজনগর ইউনিয়নে একটি মন্ডপে পুর্জা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুজামন্ডপগুলোকে বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। ওদিকে দেবী দুর্গাকে বরণ করতে ভক্তরা উদগ্রীব। তাদের আয়োজনও কম নয়। ঘরের বউ-ঝিরা কেউ খই-গুড়ে পাক দিচ্ছেন, কেউ বানাচ্ছেন নারিকেলের নাড়ু,মুড়ির মোয়া। স্কুল বন্ধ, পুজার ছুটি তাই বড়দের পাশাপাশি ছোটদের আনন্দ আরো বেশি। নতুন জামা-কাপড় কিনতে কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীড় জমাচ্ছে হিন্দু ধর্মালম্বী নারী পুরুষেরা।
লামা উপজেলা কেন্দ্রীয় দুর্গা পুজা কমিটির সভাপতি বাবুল কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বিজয় আইচ এক সূরে বলেন, সবসময়ই সব ধর্মের লোকজনের সহযোগীতায় অত্যন্ত আনন্দমুখর পরিবেশে পুজা উদ্যাপিত হয়ে আসছে। তবে এবার প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিষয়টি মাথায় রেখেই উৎসব পালনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। মন্দিরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দরিদ্রদের মাঝে প্রসাদ, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
একই কথা জানালেন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের গুলিস্তান বাজার, ইয়াংছা, পাগলির আগা, কমিউনিটি সেন্টার, আজিজনগর ইউনিয়নের তেলুনিয়া ও পৌরসভার চম্পাতলী মন্ডপ কমিটির সদস্যরা।
এদিকে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, দুর্গাপুজা মন্ডপগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি আনসার ভিডিপি সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। আশা করি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শান্তিপূর্ণভাবে পুজা উদ্যাপন করতে পারবেন সনাতন ধর্মালম্বীরা।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজা রশীদ বলেন, দুর্গাপুজা উপলক্ষে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত প্রতিটি মন্ডপের জন্য বরাদ্দকৃত চাল ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।