লামায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে বন বিভাগের দাপ্তরিক কার্যক্রম

NewsDetails_01

লামা বন বিভাগীয় কার্যালয়
বান্দরবানের লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে দাপ্তরিক কার্যক্রম। যে কোনো সময় ভবন ধ্বসে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সূত্রে জানা যায়, বন বিভাগের ৯টি সরকারি আবাসিক, অনাবাসিক পাকা ও আধা পাকা এবং ব্যারাকগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ,বিধি মোতাবেক গণপূর্ত বিভাগকে ঝুঁকিপূর্ণ কার্যালয় পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত ২৪ জানুয়ারী চিঠিও দেয়া হলেও শুক্রবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণপূর্ত বিভাগ প্রতিবেদন দাখিল করেনি। ফলে কার্যালয় ভবন নির্মাণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা যাচ্ছেনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫-৮৬ অর্থ সালে পৌরসভা এলাকার মধুঝিরিতে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় ভবন নির্মাণ করে কর্তৃপক্ষ। ১৯৯১ সাল থেকে কার্যালয়টি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। এ বন বিভাগের অধীনে রয়েছে লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা। এ তিন উপজেলার বনজ সম্পদ ব্যবস্থাপনায় রয়েছে লামা, ডলুছড়ি, তৈন, মাতামুহুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি ও সাঙ্গু রেঞ্জ। সাম্প্রতিক কয়েকটি ভূমিকম্পের ফলে ভবনের দেওয়াল সমূহে ফাটল দেখা দেয়। কিছু কিছু স্থানে ছাদ ও দেওয়ালের আস্তরও ভেঙে নিচে পড়ছে। এ ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ভূমিকম্পন হওয়ায় বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার ভবন, কর্মচারীদের বাস ভবনগুলোও ফাটল ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ অবলোপন করে নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।
সরেজমিন বন বিভাগ কার্যালয়টি বাহির থেকে চাকচিক্য দেখা গেলেও দেওয়ালের অসংখ্য স্থানে ফেটে গেছে। আবার কোন কোন স্থানে ছাদ ও দেওয়ালের আস্তার খসে পড়ছে। বছর বছর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই রংয়ের কাজ করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে কোন মতে কার্যক্রম চালানো গেলেও বর্ষা মৌসুমে ছাঁদ ছুয়ে পানি পড়ার কারণে কাজে বিঘ্ন ঘটে বলে জানান কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তারা সষংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত নতুন কার্যালয় নির্মাণের জোর দাবী জানান।
এ বিষয়ে সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খাঁন জানায়, বন বিভাগের বিভিন্ন স্থানের কার্যালয় ও আবাসিক কোয়ার্টারসমূহ ১৯৮৫ হতে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়, কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসিক কোয়ার্টার, ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তার বাস ভবনসহ ফরেস্টারের বাস ভবন, দ্বৈত বাগান মালির ব্যারাক, তৈন রেঞ্জের অস্থায়ী ব্যারাক, মাতামুহুরী রেঞ্জের দ্বৈত বন প্রহরীর বাস ভবন ব্যবহার অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে আছে। এ সকল ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে। নচেৎ যে কোন সময় ভুমিকম্পনে ধসে পড়ে জান মালের ক্ষতি হতে পারে।
এই ব্যাপারে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বন বিভাগের জরাজীর্ণ দুইটি পাকা, চারটি আধা পাকা ও দুইটি কাঁচা আবাসিক ভবন অবলোপন ঘোষণার জন্য নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি গণপূর্ত বিভাগকে পত্র দিয়ে জানানো হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ এখনো প্রতিবেদন দাখিল না করার কারণে মন্ত্রণালয়ে ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করা যাচ্ছেনা।
এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের বান্দরবান উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার দে বলেন, লামা বিভাগীয় বন বিভাগের চিঠি পেয়েছি। তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

আরও পড়ুন