গেল বছরগুলোর বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণের ফলে ব্যাপক হারে পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বিধায় এ বছর যেন এর পূণরাবৃত্তি না ঘটতে পারে, সেজন্য বান্দরবান জেলার লামা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে আগাম প্রস্তুতি। টানা কয়েকদিনের টানা বর্ষণে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে মাইকিং এর মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণদের নিরাপদে সরে যেতে তাগাদা দিচ্ছে তথ্য অফিস।
তবে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হলেও, কিছু পরিবার নিরাপদে কিংবা আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও বেশিরভাগই সরে যাচ্ছেনা। লামা পৌরসভা এলাকা. লামা সদর, গজালিয়া, রূপসীপাড়া, সরই, আজিজনগর, ফাঁসিয়াখালী ও ফাইতং ইউনিয়নে সাড়ে ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে বসবাস করছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এদিকে বর্ষণের কারণে উপজেলার পাহাড়ি ঝিরি, খাল ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। তাছাড়া পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিতে আতংকে আছেন ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীরা। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। আজ সোমবার পর্যন্ত টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলেও কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। দূর্যোগকালীন সময়ে পৌরসভা এলাকায় দুইটি ও সাতটি ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়ণ কেন্দ্র ঘোষনা করা হয়। জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যোগাযোগের নম্বর সমূহ যথাক্রমে নির্বাহী অফিসার-০১৫৫০০০৭১৮০, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ০১৮৪৫৭২৯৭২১ ও পিআইও সহকারী ০১৭১৭৭১৪৭৩৬।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদারসহ অন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা জানান, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ বসবাসকারীদেরকে মাইকিং ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের মাধ্যমে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে।
এদিকে পৌরসভা এলাকায় যারা পাহাড়ে কিংবা সমতলে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন তাদেরকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং এর মাধ্যমে তাগাদা দেয়া হয়েছে। এছাড়া লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র খোলার পাশাপাশি আশ্রয় গ্রহিতাদের জন্য তাৎক্ষনিকভাবে শুকনো খাবার, খিচুড়ি ও পানির ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজা রশীদ বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পাহাড়ে ঝুঁকিপুর্ণ বসবাসকারীদেরকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং এর মাধ্যমে তাগাদা দেওয়ার পাশাপাশি জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। এছাড়া সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে খেলা রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে দূর্যোগকালীণ সময়ে মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন।