বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগরের ইসলামপুর বি-আলম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় স্থানীয় শিক্ষার্ত্রীরা মানুষের সহায়তায় একটি সমিতির ভবনে করছে শিক্ষা অর্জন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারী স্থানীয় বেশ কয়েকজন শিক্ষানুরাগী বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৭-৯৮ সালে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি চার বছর আগে ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষনা করে। বর্তমানে বিদ্যালয়টির সবকটি শ্রেণীকক্ষ, আসবাবপত্র, পানীয়জল ও পয়নিষ্কাশনের চরম সংকটের কারণে বন্ধের পথে বিদ্যালয়টি। শ্রেণীকক্ষ না থাকায় বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি সমিতির ঘরে, কখনও বা মাঠে চলে শ্রেণী কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক মোস্তাক আহমদ, জোসনা বেগম জানান, অবকাঠামো ও আসবারপত্রের সমস্যার কারণে তিন বছর আগে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যালয়টি। ২০১৫ সালে ১৫ মার্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর থেকে এলাকার সকলের হাতে পায়ে ধরে তাদের ছেলে-মেয়ে ভর্তি করতে অনুরোধ জানায়। কিন্তু যে বিদ্যালয়ের ভবন নেই সেই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষক থেকে কি করবে।
আরো জানা গেছে, এত সমস্যার পরেও ২০১৬ সালের পিএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয় থেকে ৯জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে ৭জন এ-প্লাস ও ২জন এ গ্রেডে পাস করেছে। বর্তমানে ইসলামপুর বি-আলম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২শ ৮৩জন। যেখানে সরকার মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ রুম চালু করে ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম চালু করছে সেখানে ক্ষোধ ভবন না থাকায় শিক্ষার্ত্রীরা বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনের জন্য আসতে অপরগতা প্রকাশ করে।
শিক্ষার্থীর আরেক অভিভাবক হোসনে আরা বেগম বলেন, এতো সংকটের পরও বিদ্যালয়ের ভাল ফলাফল দেখে অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। তারা দ্রæত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে সরকার ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র হস্তক্ষেপ কামনা করছি, এভাবে একটি বিদ্যালয় চলতে পারেনা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার বলেন,বিদ্যালয়ের নামটি আছে, নেই ভবন। ভবন না থাকায় কখনও খোলা আকাশের নিচে, আবার কখনও পাশের সমিতির ঘরে চলে পাঠদান।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি, বর্গা শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠদান করার খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলেও এই বিদ্যালয়ে পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতা থাকলেও ভবন বিহীন বিদ্যালয় তিন পার্বত্য জেলার কোথাও আছে কিনা বিষয়টিতে বিস্মিত অনেকে।
লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, নতুন ভবনের তালিকায় ইসলামপুর বি আলম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম সংযুক্ত করতে এলজিইডি’র সাথে আলোচনা চলছে।