লামায় মন্দিরে হামলার ঘটনায় ১৩ দিনে গ্রেফতার মাত্র ১১ জন !

আসামী প্রায় ৭শ

purabi burmese market

কুমিল্লায় কোরান অবমাননার ঘটনার জের ধরে বান্দরবানের লামা উপজেলায় গত ১৪ অক্টোবর সকালে লামা বাজারে সর্বস্তরের মুসলিম তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ এর পর লামা কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে দফায় দফায় হামলা, হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে সহ পৃথক ৩ টি মামলা দায়ের হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩ দিনে এই পর্যন্ত মাত্র ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়,গত ১৪ অক্টোবরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে লামা থানায় বিএনপি মনোনীত গত পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ শাহীনকে প্রধান আসামি করে ৪৮ জনকে আসামি এবং ২০০ জন অজ্ঞাত উল্লেখ করে একটি মামলা করে।

অন্যদিকে লামা বাজারের দোকান ভাঙচুর এবং পুজার মণ্ডপে হামলায়, লামা কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরের সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য বাদী হয়ে সোমবার (১৮ অক্টোবর) লামা মাতামুহুরী কলেজের ইংরেজি প্রভাষক মোঃ মোনায়েমকে ১নং আসামী করে ৯৮ জনকে এজাহার নামীয় ও ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়াও এক ব্যবসায়ী বাদি হয়ে ৫ জনকে এজাহার নামীয় ও ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মোট তিনটি মামলায় এজাহার নামীয় আসামী ১৫১ ও অজ্ঞাত আসামী ৫৬২ জন। এই তিন মামলার দায়ের হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হল, মোঃ কাউসার (৩৫), মোঃ খালেক (৪০), আল আমিন (১৯) ও মোঃ নিজাম (২৭), বাবলু (৩৭), মোঃ মহিউদ্দিন(৪০), মোঃ আরিফ(২৮), মো ওসমান গনি (১৯) নবি হোসেন(২২), মোঃ আরিফ (৩৫)।

মন্দির কমিটির সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, হামলাকারীদের ছোঁড়া ইটপাটকেলে সনাতন ধর্মালম্বীদের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। হামলাকারীরা মন্দিরের অনেক মালামাল, লোহার গেইট, সীমানা দেয়াল, প্যান্ডেল, ডেকোরেশনের গেইট সহ বেশ কয়েকটি হিন্দু ধর্মালম্বী লোকজনের দোকানপাট ও ৫টির অধিক বসতবাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।

dhaka tribune ad2

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, এই পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে লামা থানায়। এজাহার নামীয় ১৫১ জনকে আসামী এবং ৫৬২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অভিযান চলমান থাকবে।

প্রসঙ্গত,কোরান অবমাননার মানববন্ধন শেষে শত শত মুসল্লি জড়ো হয়ে লামা বাজারের কেন্দ্রিয় দূর্গাপূজা উৎসবের প্রধান গেইট ও লামার কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি ভাংচুর চালানো হয়। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ও স্থানীয় জনতার একাংশ প্রতিরোধ গড়ে তুলে ও এক পর্যায়ে পুলিশ ফাকা গুলি বর্ষন করে। এসময় পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়, গুরতর আহত হয় লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এসময় ত্রিমুখী সংঘর্ষে মুসুল্লিসহ অর্ধশত লোক আহত হয়। পরে বাজারে অবস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৪০টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ৮টি বসত ঘরে ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করা হয়।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।