লামায় ম্রো পাড়ায় ডায়রিয়ায় ১ জনের মৃত্যু : আক্রান্ত শতাধিক

purabi burmese market

বান্দরবানের লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি দুই পাড়ায় ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের মিনতুই ও পমপং ম্রো পাড়ায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ইতিমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যু ও শতাধিক আক্রান্ত হয়েছে।

রূপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য লংক্রাত ম্রো ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু ও আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর পেয়ে আক্রান্ত পাড়াগুলোতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আলীকদম সেনাবাহিনীর একটি মেডিকেল টিম। পাহাড়ি ঝিরি ও ঝর্ণার দূষিত পানি পান করার কারণেই পাড়াগুলোতে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

রূপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য লংক্রাত ম্রো জানায়, গত রবিবার সকাল থেকে মিনতুই ম্রো পাড়ার লোকজনের মধ্যে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর পাশের পমপং পাড়ার লোকজনের মাঝেও ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এতে সোমবার রাত ২টার দিকে মিনতুই পাড়ার বাসিন্দা মৃত পালেং ম্রো’র ছেলে মাংচি মুরুং (৫১) মারা যান। এক পর্যায়ে দুই পাড়ার ৩৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে আলীকদম সেনাবাহিনীর একটি মেডিকেল টিম গত সোমবার দিনব্যাপী মিনতুই ও পমপং ম্রো পাড়া সহ আশপাশের মোট ১২৫ জন রোগিকে চিকিৎসা প্রদান করে। এর আগে অবস্থার অবনতি হলে দুইটি ম্রো পাড়ার ৩৩ জন শিশু ও বয়স্ক নারী পুরুষকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে পাহাড়ের পল্লীগুলোতে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। পাড়াগুলোর অবস্থান পাহাড়ের চূড়ায় হওয়ায় টিউবওয়েল ও রিং ওয়েল স্থাপনেরও সুযোগ থাকেনা। তাই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত মানুষগুলো বাধ্য হয়ে ঝিরি ও ঝর্ণার পানি পান করে থাকেন। মূলত এসব ঝিরি ও ঝর্ণার দূষিত পানি পান করার কারণেই পাড়াগুলোতে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ রোবীন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে ভিড় জমাচ্ছেন। গত ১ সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। গত দুই দিনে দুইটি ম্রো পাড়ার ৩৩ জন শিশু ও বয়স্ক নারী পুরুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

dhaka tribune ad2

তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে ডায়রিয়া রোগের ঔষুধের কোন সংকট নেই। কমপ্লেক্সের শয্যা সংখ্যা ৫০টি হলেও অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় মেঝেতেও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।