নিয়োগবিধি সংশোধন ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণের দাবীতে বান্দরবানের লামা উপজেলায় টানা কর্মবিরতিতে রয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা। গত ২৬ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ২.৩০ পর্যন্ত উপজেলার সকল স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে স্বাস্থ্য সহকর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এতে বন্ধ রয়েছে সব ধরণের টিকাদান কর্মসূচী। বিশেষ করে চলতি মৌসুমে হাম রুবেলার টিকা প্রদান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন তৃণমূল পর্যায়ে শিশু ও গর্ভবতী নারীসহ সেবাপ্রার্থীরা।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বর্তমান বেতন স্কেল পরিবর্তনে ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পরবর্তীতে ২০১৮ ও ২০২০ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘোষণা ও প্রতিশ্রুতি থাকা স্বত্ত্বেও স্বাস্থ্য সহকারীদের বেতন স্কেল যথাক্রমে ১১, ১২ ও ১৩ এ পদোন্নতি না করায় স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের মাঝে দীর্ঘদিন ক্ষোভ বিরাজ করছে। ফলে গত ২৬ নভেম্বর থেকে দেশব্যাপি স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগবিধি সংশোধন ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণে টানা কর্মবিরতি শুরু করেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। বাংলাদেশ হেল্থ অ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিদর্শক সমিতি, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাঠ কর্মচারী এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ হেল্থ ইন্সপেক্টর সেক্টোরাল এসোসিয়েশন যৌথভাবে এ কর্মবিরতিতে নামেন।
আজ মঙ্গলবার (১ডিসেম্বর) সকালে লামা উপজেলা ও একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, অফিস চত্ত্বরে ব্যানার টাঙ্গিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে স্বাস্থ্য সহকারীরা। এ কারণে টিকা না দিয়েই স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ফিরে যাচ্ছেন শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা। ইউনিয়ন কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে ঘুরেও টিকা দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তারা।
দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে আসা হালিমা বেগম, রোকেয়া বেগমসহ অনেকে জানান, তাদের বাচ্চার টিকার তারিখ ছিল। কিন্তু গত কদিন ধরে কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন কেউ নেই। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেও দেখেন কর্মবিরতি চলছে।
বাংলাদেশ হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের লামা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিদর্শক সমিতির বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, আমাদের নিয়োগবিধি সংশোধন ও বেতন বৈষম্য দূরিকরণে সরকার প্রধানসহ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পূর্বঘোষিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্থানীয় ও কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মবিরতিতে নেমেছি। যতক্ষণ দাবি পূরণ না হবে, ততক্ষণ কর্মবিরতি চলবে।