আসন্ন ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান প্রার্থী কর্তৃক মিথ্যাচার, গুজব ছড়িয়ে ভোটারদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো, হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভোটারদের জিম্মি করার চেষ্টার প্রতিবাদে এবং ভোটের দিন যাতে ব্যালট পেপার ভোট কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়-এ দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোটর সাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আক্তার কামাল (মাইজ্জা মিয়া)।
গত রবিবার সন্ধ্যায় লামা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন প্রার্থীর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মো. কায়েস মিয়া ও নির্বাচন কর্মী মো. হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন চেয়ারম্যান প্রার্থী আক্তার কামাল লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি আকতার কামাল (মাইজ্জা মিয়া) লামা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হই। আমি মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছি। সাম্প্রতিক সময়ে আমি লক্ষ্য করছি আমার প্রতিদ্বন্ধী চেযাররম্যান প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের মিথ্যাচার ও গুজব ছড়িয়ে ভোটারদেরকে প্রভাবিত করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান প্রার্থীর এ মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
তিনি আরো বলেন, গত ১৪ অক্টোবর লামা বাজারে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় লামাবাসীর মন চরমভাবে মর্মাহত। লামার দীর্ঘদিনের সম্প্রীতি এবং সহাবস্থানের ক্ষেত্রে এই ঘটনাটি ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। আশা করছি আমরা এই জাতীয় ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে আমরা সকলে এই বিষয়ে আরো দায়িত্বশীল ও যতœবান হবো। আমার বাড়ি মেরাখােলা মুসলিম পাড়া ২নং ওয়ার্ডে। লামা বাজারের ঘটনার জেরে যাতে করে মেরাখোলায় কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই জন্য আমি আমার ছেলে সন্তান ও ইউনিয়নের জনসাধারণকে সাথে নিয়ে মেরাখোলা মন্দিরের পাহাড়ায় ছিলাম। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, লামা বাজারের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আমার মেঝ ছেলে মো. আরিফ, আমার ছোট ভাই মোজাহের কামাল ও আমার ভাগিনা মোজাম্মেলকে এজাহার নামিয় আসামী করা হয়েছে। আমার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য এবং আমাকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে আমার পরিবারের সদস্যদের নাম এ মামলায় জড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১০ বছর মেম্বার ও ৯ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। দায়িত্বপালনকালে সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমি নিজে মেরাখোলা মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য ২০ শতক জায়গাও দান করেছি। আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ইউনিয়নের ১,৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট প্রদান ও আমার নির্বাচনী এজেন্টদের মারধর করার পরিকল্পনা করেছে বলে জানতে পেরেছি। এছাড়া আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণায় ও উঠান বৈঠকে প্রকাশ্য ভোটারদের জানিয়েছেন ভোট কেন্দ্রে আগত সকল ভোটারদেরকে চেয়ারম্যান পদের ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সীল মারতে হবে। ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে চেয়ারম্যান পদের ব্যালট পেপার নিয়ে গমন করে সীল মারা যাবে না। প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ভোটের আগের দিন রাতে যে কোন সময় সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের সাথে নিয়ে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সীল মারবেন। যে কোন ধরণের গুজব ছড়িয়ে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির হার কমানোর জন্য প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী পরিকল্পনা করছেন। নির্বাচনের আগের দিন রাতে কোন প্রার্থীর কর্মী, সমর্থক এবং লোকজন যাতে ভােট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে নির্বাচন কমিশন এবং আইন-শৃংখলা বাহিনীকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আপনাদের মাধ্যমে অনুরোধ করছি।
প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী সরকার দলীয় মনোনিত হওয়ায় ইতিমধ্যে জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ পছন্দের প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়ার জন্য একটি তালিকা নির্বাচন অফিসে জমা দিয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আপনাদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, রিটার্নিং অফিসার এবং আইন-শৃংখলা বাহিনীর সকল সম্মানিত কর্মকর্তাদের কাছে আমার বিনম্র অনুরোধ নির্বাচনে যাতে কোন ধরণের কারচুপি না হয় সেই ব্যবস্থা করুন।