শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও উন্নয়ন মাটিরাঙ্গা পৌর নির্বাচনের প্রধান ইস্যু

NewsDetails_01

আগামীকাল (১৪ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং উন্নয়নই ভোটারদের কাছে প্রধান ইস্যু। কিন্তু আওয়ামীলীগের ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী এবং বর্তমান মেয়র মো: শামছুল হক’র সাথে বিদ্রোহ করে অপেক্ষাকৃত তরুণ আওয়ামীলীগ নেতা এম এম জাহাঙ্গীর আলম ‘মোবাইল’ প্রতীকে নির্বাচনে মাঠে নামায় অশান্তির নানা গুঞ্জনও প্রতিদিন ডালপালা ছড়াচ্ছে। তবে ২৫ বর্গকিলোমিটারের এই পৌরসভার প্রায় উনিশ হাজার ভোটারের মধ্যে বিএনপি প্রার্থী মো: শাহজালাল কাজল’র ‘ধানেরশীষ’ প্রতীকের জোরালো সমর্থন লক্ষণীয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত বি-গ্রেডের এই পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৯৬৫ জন। ২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মূল সড়ক ব্যতীত অন্যান্য সড়কগুলোর অবস্থা ভালো নয়। মাটিরাঙ্গা বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। সাধারণ ভোটাররা এসব ইস্যু নির্বাচনের প্রধান বিষয় হিসেবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়াও মাটিরাঙ্গায় বিভিন্ন দল, মত, সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার ইস্যুটিও সব সময় প্রাধান্য পায়।

মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নির্বাচনে উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, মাদক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে ভোটারদরে মন জয় করতে ব্যস্ত রয়েছেন। মাটিরাঙ্গা পৌরসভার নির্বাচন ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে এখনো কোন অভিযোগ করেননি। অবশ্য আওয়ামীলীগের পথের কাটা ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’র যত অভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধেই।

স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমরা সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বলছেন নির্বাচনের পরে বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে আমার সমর্থকদের হয়রানি করা হবে। এখনো সময় আছে মোবাইল মার্কার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারণা করার, কেননা যেই ভোট পায় না কেন ঘোষণা করা হবে নৌকার নাম।

NewsDetails_03

তিনি আরো বলেন, গত সোমবার ৩১ জানুয়ারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রশাসনের বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় আমি এসব বিষয় মৌখিকভাবে জানিয়েছি।

অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল হক বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী যেসব অভিযোগ করছেন তা ভিত্তিহীন। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে মিথ্যাচার করছে দলের এবং আমার বিরুদ্ধে। তিনি দলের বাইরে এমন কোন কর্মকা- করেননি যে ভোটাররা তাঁকে ভোট দিবে। বরং তাঁর লোকজনই আমার সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে। নির্বাচনের পরাজয়ের আশঙ্কায় তিনি নানা ধরনের দোষ চাপাচ্ছেন।

বিএনপির প্রার্থী শাহ জালাল বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় এখনো পর্যন্ত কোন বাধাবিপত্তি আসেনি। যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই ভোটাররা তাকে গ্রহন করছে। যদি সুষ্ঠ ভোট হয় তিনিই জয়ী হবেন। তবে অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে তিনিও সংশয়ে রয়েছেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রাজু আহমেদ বলেন, এখনো পর্যন্ত কোন প্রার্থী লিখিত ভাবে কোন প্রার্থী অভিযোগ করেননি। আশা করছি সুষ্ঠ ও সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।

উল্লেখ্য, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, ৩টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬ জন, ৯টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪০ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এরমধ্যে ৩ নং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মোট ভোটার ১৮ হাজার ৯৬৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৮০৬ জন এবং নারী ভোটার ৯ হাজার ১৫৯ জন। ১৪ ফেব্রুয়ারি ব্যালটের মাধ্যমে ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন