শিক্ষক সংকট, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও আসবাবপত্রসহ নানাবিধ সমস্যার কারনে লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।, বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবত প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকসহ ১৮ জন শিক্ষকের পদ শূন্য পড়ে আছে।
বছরের পর বছর যাবত বাংলা, ইংরেজী, গণিত,বিজ্ঞান, সমাজিক বিজ্ঞান, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান ধর্মীয়, বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ, জীব ও রসায়ণ, বাণিজ্য বিভাগের ব্যবসায় শিক্ষা, ভ’গোল , চারু ও কারুকলা, শারীরিক শিক্ষা ও কৃষি শিক্ষা বিষয়ে কোন শিক্ষক নেই। সেইসাথে একজন উচ্চমান সহকারী ও তিনজন এম.এল.এস.এস”র পদও শূন্য। অনুমোদিত ২৭ জন শিক্ষকের স্থলে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৯জন। বিদ্যালয়ের বর্তমানে ছাত্র ছাত্রীরসংখ্যা ৮০০ জন। ৬ষ্ট থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রত্যেক শ্রেণীতে ২টি করে শাখা আছে। শিক্ষক শূন্যতার কারনে সৃষ্ট অচলাবস্থার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে অভিভাবক মহলে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা এবং চরম হতাশা। বিদ্যালয়ের ভূক্তভোগী ছাত্র-অভিাবকগণ সেই থেকে এসব সংকট নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন-নিবেদন করেও কোন ইতিবাচক সাড়া পাননি। সাবেক লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইলের আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষামনÍ্রণালয় ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ১২৬ নং স্মারকে বিরাজমান শিক্ষক সংকট নিরসনের জন্য মহাপরিচালক মাউসি অধিদপ্তরে নির্দেশ দিলেও এখনো পর্যন্ত শূন্য পদ সমূহে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি ।
বান্দরবান পার্বত্য জেলার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের কাঁছাকাঁছি জনসংখ্যা অধ্যুসিত লামায় ১৯৬৭ সালে এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লামা জুনিয়র হাইস্কুল। প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর ১৯৮১ সালে বিদ্যালয়টি জাতিয়করণ হয়। তারপর থেকে পশ্চাদপদ পার্বত্য এই জনপদে শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে অসছিল। প্রতিষঠার ৪৬ বছর পর বিশেষত: শিক্ষক সংকটসহ নানামূখি সমস্যার কারনে বিদ্যালয়টি অতীতের অর্জিত সব গৌরব হারিয়ে নিস্ব হয়ে পড়েছে। জানা গেছে,বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২১জন প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালন করেছেন, তারমধ্যে ১৬জনই ছিলেন ভারপ্রাপ্ত । গত ১৫ বছর ধরে প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের পদ দুটিতে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষকরা।একারনে বিদ্যলয়ে কর্মরত শিক্ষক ও অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পরিচালনাসহ প্রশাসনিক কার্যক্্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ে কোনদিনই পরিপুর্নভাবে ক্লাশ হয় না, যখন তখন বিদ্যালয়টি ছুটি হয়ে যায়। লেখাপড়ার গুণগতমান সর্বনিন্ম পর্যায়ে নেমে যাওয়ার ফলে অভিভাবকেরা জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থী সন্তানদের নিয়ে উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এই সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য তারা জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের শূন্য পদ গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন কুতুবি পরিপুর্ণভাবে ক্লাশ না হওয়া ও যখন তখন বিদ্যলয় ছুটির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শূন্য পদ সমূহে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বান্দরবান ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্রগ্রামে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীরদে ভবিষ্যত চিন্তা করে স্থানীয় ৫ জন শিক্ষিত যুবককে খন্ডকালীন শিক্ষক ও লামা পৌরসভার পক্ষ হতে ৩ জন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে নিয়মিত শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা করা হচেছ।