সংকটে রাঙামাটি টেক্সটাইলস মিলস

NewsDetails_01

rangamatiজনবল সংকটের কারনে অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে রাঙামাটি কাউখালী উপজেলার ঘাগড়ার রাঙামাটি টেক্সটাইল মিলস। টেক্সটাইলস মিলে জনবল সংকটের কারণে সুতার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দক্ষ শ্রমিক সংকটের একমাত্র কারণ নিম্নমানের মজুরি। এজন্য মিলের কর্মরত শ্রমিকরা পেশা বদল করে অন্য কাজে চলে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, মিলে যে মজুরি দেয়া হচ্ছে, তা অতি নগণ্য। অপরদিকে,বেশ কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করেন,আমাদেরকে যে পরিমান পরিশ্রম করতে হয় সে পরিমান মজুরী আমরা পাচ্ছি না। শ্রমিকরা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,সরকারী ব্যবস্থাপনায় ১৯৭৭ সালে রাঙামাটির ঘাগড়ায় ২৬ দশমিক ২৪ একর জমির ওপর মিলটি স্থাপিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে মিলের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। এরপর ২০০৮সালের ১৮ জুন পর্যন্ত মিলটির উৎপাদন কার্যক্রম চালু ছিল। পরবর্তী সময়ে বেসরকারিকরণের উদ্দেশ্যে মিলটি প্রাইভেটাইজেশন কমিশনে হস্তান্তর করা হয় এবং পুনরায় চালুকরনের উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের নিকট থেকে মিলটি ফেরত নেয়া হয়।
দীর্ঘ ৮ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালের ২২ মার্চ বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার রাঙামাটি টেক্সটাইল মিলের উৎপাদন পুনরায় চালু করে। কিন্তু দীর্ঘদিন চালু না থাকায় মিলের অনেক যন্ত্রাংশ বর্তমানে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাট আর দক্ষ শ্রমিক সংকটের কারণে মিলের সুতার উৎপাদন বাড়ছেনা।
রয়েছে বিদ্যুৎ এর তীব্র সংকট। ফলে পনের মাস পার হয়ে গেলে ও বাজারে সুতার চাহিদা থাকা সত্বেও মিলের সুতার উৎপাদন বাড়াতে পারছেনা। প্রায় ৫০০ শ্রমিক নিয়ে মিলটিতে উৎপাদন পুনরায় শুরু হলেও, বর্তমানে এ মিলটিতে শ্রমিক সংখ্যা ৩৩০-৩৪০ জন। একজন শ্রমিককে দৈনিক ১২০ টাকা হারে মজুরি দেয়া হয় আবার কেউ কেউ পাচ্ছেন ১৫০-১৬০ টাকা কিন্তু এত স্বল্প মজুরিতে জীবনযাপন সম্ভব নয় বলে শ্রমিকরা কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মিলের কর্মরত শ্রমিকরা। পার্বত্য চট্টগ্রামের একমাত্র সুতা উৎপাদনকারী বিটিএমসির এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে দক্ষ শ্রমিক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের সংকটে রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
টেক্সটাইল মিলটির বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে রাঙামাটি টেক্সটাইল মিলস এর সহকারী প্রকৌশলী অমর বিকাশ পাহাড়বার্তাকে চাকমা বলেন, আট বছর পর্যন্ত যে মিলটি বন্ধ ছিল সে সময়তো মিলের যন্ত্রাংশগুলো অকেজো হয়ে পড়েছিল। তাই কিছু কিছু মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে।বর্তমানে আমরা মেশিন বাড়ানো চেষ্টা করছি।এ মিলে ১৮ টি মেশিন চালু রয়েছে আরো ৪ টি মেশিন চালু করা হবে।
রাঙামাটি টেক্সটাইলস মিলস এর মহাব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক পাহাড়বার্তাকে বলেন, যেহেতু মেশিনটি আট বছর বন্ধ ছিল সেহেতু মেশিনটি সম্পুর্নভাবে চালু করতে আরো কিছু দিন সময় লাগবে।আমাদের আর্থিক স্বচ্ছলতার ও প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি শ্রমিকদের প্রশিক্ষন ও কিছু খুচরা যন্ত্রাংশেরও দরকার আছে।
মিলটি প্রতি মাসে বিদ্যুৎবিলসহ অন্যান্য খরচ করে এখনো লাভে পৌঁছতে পারেনি। রাঙামাটি টেক্সটাইল মিল এখনো রুগ্ন শিল্প বলে বিবেচিত। মিলের সব ইউনিট উৎপাদনে গেলে মিলটি লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবে এবং শ্রমিকের মজুরি বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন