প্রতিবন্ধীরা এখন আর সমাজের বোঝা নয়। প্রতিবন্ধীরাও পারে সমাজের চিত্রকে পাল্টে দিতে। যার প্রমান দিলেন জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী মোঃ আলাউদ্দিন।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের পশ্চিম বাইশারী গ্রামে ভাড়াবাসা নিয়ে বসবাস করে আসছিলো আলাউদ্দিন। তার জন্মস্থান ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলায় হলে ও স্ব পরিবারে দীর্ঘকাল যাবৎ বসবাস করেন উপজেলার বাইশারীতে।
প্রতিবন্ধী আলাউদ্দিন কারো বোঝা হয়ে বসে থাকতে শিখেনি। অন্য প্রতিবন্ধীদের মতো কারো কাছে হাত পাতেন না। নিজেও সচ্ছলভাবে চলে এবং তার এই কাজে কর্মসংস্থান হয়েছে ১০ জন শ্রমিকের। সে এখন সুন্দর মতো সংসার চালাতে আর কোন বাঁধা নেই। বাইশারী বাজারে রয়েছে তার বিশাল হোটেল। রান্নাবান্নাসহ বিভিন্ন আইটেমের নাস্তা তৈরীতেও সে সমান পারদর্শী। তারপরও সে বসে নেই, এবার শুকনো মৌসুমে ২ একর জমিতে সবজি চাষ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
এই বিষয়ে আলাউদ্দিন বলেন, দুই একর জমি বর্গা নিয়ে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ শুরু করে সফলও হয়েছেন। মাত্র টমেটো বিক্রি করে এখন সফলতার মুখ দেখেছেন। এপর্যন্ত তার ক্ষেতের টমেটো বিক্রি করেছেন ৯ হাজার কেজির মতন। আরো অনেক টমেটো ক্ষেতে মজুদ রয়েছে। টমেটোর পাশাপাশি তিনি বর্তমানে চাষ করেছেন মরিচ, তিত করলা, বেগুন, ক্ষিরা, লাল শাক কচুসহ নানা জাতের সবজি। বর্তমানে বাজারে বিক্র হচ্ছে টমেটো, লালশাক,আর মরিচ। বাকী সবজি গুলুতে এখনও ফলন আসেনি। তবে তিনি এপর্যন্ত মুলধন ছাড়া ও লাখ টাকা আয় করেছেন বলে জানান।
আলাউদ্দিন আরও জানান, এসব নিজস্ব পদ্বতিতে বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে সময় মত কিটনাশক ছিটিয়ে শ্রমিক দিয়ে তিনি এসব সবজি ক্ষেত করেছেন। জম্ম থেকে একটি পা না থাকলে ও তিনি কোনদিন সাহস হারাননি। সরকারী ভাবে তদারকি ও পরামর্শ পেলে তিনি আরো লাভবান হতেন বলে জানান।
আগামী রমজান মাসের জন্য ক্ষিরা, শসা ও মরিচের আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ মৌসুমেই আরো লাখ টাকা আয় সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
উপসহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল আলম বলেন, প্রতিবন্ধী আলাউদ্দিন একজন সফল চাষী। অনেক সময় তার বিভিন্ন সবজি চাষের সফলতার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামীতে সরকারীভাবে সার, কিটনাশক ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হলে আরো লাভবান হবে আলাউদ্দিন।