রোগচক্রের পঞ্জিকায় এখন হামের মৌসুম। হাম প্রতিরোধে গত মার্চ মাসে সারাদেশে ক্যাম্পেইন করার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতায় সে পরিকল্পনা স্থগিত। আর এর ফাঁকে হানা দিয়ে বসেছে হাম। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হামে আক্রান্ত প্রায় দুই শতাধিকের বেশী। হাম আক্রান্ত এলাকা গুলো এতো দূর্গম যে যেখানে পায়ে হেঁটে কিংবা স্থানীয়রা রোগীদের উপজেলা সদরের আনতে আনতে ঘটতে পারে মারাত্মক দূর্ঘটনা। এমন দূর্গমতার মধ্যে বড় চ্যালেঞ্জিং সময়েও হাম আক্রান্ত এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন হাম আক্রান্ত রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দূর্গম এলাকায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করে ও পায়ে হাটা বন্ধুর পথ অতিক্রম করে পাশে দাড়িঁয়েছে এলাকাবাসীর।
সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ দিয়েছে। হামের পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অনেক রোগীকে হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রামে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাম আক্রান্ত এলাকার মানুষের অন্যতম পেশা জুমচাষ। জুমের ফসলহানী ও দূর্গম এলাকায় বসবাস করায় ঠিকমতো পুষ্টি পায় না এসব শিশুরা। যার কারণে প্রতিবছর এ মৌসুমে হামসহ নানা অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগছে।
সারাদেশের মানুষ যখন করোনা ভাইরাস আতঙ্কে ঘরবন্দী তখন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের আওতাধীন বাঘাইহাট জোনের সেনা সদস্যরা ঘন্টার পর ঘন্টা পায়ে হেটে পুষ্টিহীনতায় ভোগা এসব শিশুদের জন্য নিয়ে যাচ্ছে পুষ্টিকর খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি।
গত ১ এপ্রিল (বুধবার) খাগড়াছড়ি রিজিয়নের তত্বাবধানে ও বাঘাইহাট জোনের উদ্যোগে সাজেক ইউনিয়নের দূর্গম মাচালং ও শিয়ালদহে হামে আক্রান্ত পরিবারগুলোর মাঝে এসব সামগ্রী পাঠানো হয়। এসব গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার ও ওষুধপত্র পৌঁছে দেয় সেনা সদস্যরা।
বাঘাইহাট জোনের তথ্য মতে, হাম আক্রান্ত এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সুপেয় পানি, পুষ্টিকর খাবার, ত্রাণ সামগ্রী ও চিকিৎসা সামগ্রী (ঔষধ) নিয়ে স্থানীয়দের পাশে থাকবে বাঘাইহাট জোন তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সাজেকের জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা সেনাবাহিনীর মহতি এ উদ্যোগের জন্য খুশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য।