সাফজয়ী ঋতুপর্ণার বাড়ি নির্মাণে বাধার অভিযোগ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড়

সাফজয়ী ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়ি নির্মাণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। ২০২২ সাফ জেতার পর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বাড়িসহ অনেক কিছুরই প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন রাঙামাটির এই কন্যা। কিন্তু তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০২৪ সাফ জেতার পর। বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে বাধার অভিযোগ তুললেন ঋতুপর্ণা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে নিজেই ব্যাপারটি জানালেন।

ফেসবুকে তিনি লেখেন, ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো যখন সাফ চ্যাম্পিয়ন হই। তখন পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ সদস্য ছিলাম। আমি আর রুপনা চাকমা রাঙামাটি জেলার আর বাকি তিনজন খাগড়াছড়ি। রাঙামাটি জেলা আমাদের পাঁচজনকে রাজকীয়ভাবে সংবর্ধনা এবং সম্মানিত করেন। সেসময় স্বয়ং জেলা প্রশাসক আমার নিজ গ্রামের বাড়িতে এসেছেন আমার ঘরবাড়ি ও যাতায়াতের অবস্থান দেখে যান। সেবারে রুপনা চাকমাকে বাড়ি নিমার্ন করে দেন জেলা প্রশাসন। যা যা প্রতিস্রুতি দিয়েছেন সব-ই বাস্তবায়ন করে দেন। আমাকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো আমার কি চাওয়া পাওয়া আছে প্রশাসন থেকে, তখন আমি চেয়েছিলাম আমার এলাকাবাসী সুবিধার্থে যাতায়াতের জন্য রাস্তা, কারণ আমার বাড়ির যাওয়ার রাস্তা নেই। আমি আমার নিজের জন্য কিচ্ছু চাইনি। রাঙামাটি জেলা প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিলেন রাস্তা সংস্কার করে দিবেন এবং সেই সাথে আমাকে জায়গাসহ বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিস্রুতি দিয়েছেন। স্বয়ং আমাকে ডেকে নিয়ে ঘাগড়া বাজারে খাস জায়গা নির্ধারণ করেছেন এবং জায়গাটা আমারও পছন্দ হয়, সবকিছু ঠিকটাক হয়। যাইহোক রুপনার সবকিছু বাস্তবায়ন হয়েছে, আমার মনেও বিশ্বাস, আশা ছিল প্রশাসনের কাছ থেকে আমারও সবকিছু বাস্তবায়ন হবে।

দুঃখের বিষয়, আমার কোনকিছু বাস্তবায়ন হয়নি। যাইহোক ঔ বিষয় নিয়ে আমি আর মাথাঘামাইনি, অনুশোচনাও হয়নি। ২০২২গেলো সবকিছু ভুলে গেলাম আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে মনোযোগী হই।
২০২৪ দ্বিতীয়বারে মতো বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়। সেই টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় পুরস্কার জিতেছি। দ্বিতীয়বারের মতো দেশবাসী সবাই মিলে আনন্দ, উল্লাস ভাগাভাগি করে উদযাপন করি। এক-ই ভাবে ২০২২সালে যেভাবে আমাদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন, ঠিক দ্বিগুণ সেভাবে-ই আমাদের রাজকীয়ভাবে সংবর্ধনা এবং সম্মানিত প্রদান করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। ২০২২সালে যে আমাকে মিথ্যা আশ্বাস এবং প্রতিস্রুতি দিয়েছেন, এই নতুন বাংলাদেশ, এই নতুন প্রশাসনের কাছ থেকে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল বিগত ২০২২সালে জায়গাসহ বাড়ির করে দেওয়া এবং যাতায়াতের জন্য রাস্তা সংস্কার করে দেওয়ার প্রতিস্রুতি দিয়েছিলেন সেই-টা বাস্তবায়ন হবে।

NewsDetails_03

দেরিতে হলেও কিছুদিন আগে আমাকে UNO মহোদয় কাজী আতিকুর রহমান স্যার খুশির সংবাদটি জানিয়ে দেন, আমার এলাকার গ্রামবাসীর জন্য রাস্তা নির্মাণ বাবদ রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ হতে ইতোমধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। একমাস আগে জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য রাস্তাটি পরিদর্শনও করেছেন। UNO স্যারের উনার নিজ উদ্যোগে আমার বাড়িতে সুপেয় পানির জন্য নিজেই গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছেন।

ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাকে একটা ঘর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রশাসন রাস্তা এবং জায়গাসহ বাড়ির করে দেওয়ার অনুমোদন সম্মতি দিয়েছেন। আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রশাসনকে, খুব-ই এক্সাইটেড ছিলাম সংবাদটা শুনে। এতোদিন পর প্রশাসন আমাকে বাড়ি করে দেওয়ার সদয় সম্মতি দিয়েছেন, কিন্তু এর মধ্যে আমি শুনতে পাচ্ছি কোনো এক মহল থেকে বাধা আসতে শুরু করেছে তাহলে কি আমার ঘাগড়ায় কি কোন ঠাঁই নেই??

এখন আমার অনুশোচনা হচ্ছে, ২০১৭ সাল থেকে আমি দেশের জন্য খেলতেছি দেশের প্রতিনিধিত্ব করতেছি,নিজে জেলার মানুষের কাছে মূল্যায়নটা পাইলাম কই?? লিখাই যদি ভুল ক্রটি থাকে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

আরও পড়ুন