আরো জানা গেছে, এ সংবাদ পাওয়ার পর গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে চইক্ষ্যং পাড়ায় অবস্থান করছেন সেনা-বিজিবি‘র অন্তত ৩০ জনের একটি দল। তবে বিজিবির দাবী তারা শূন্য রেখায় অবস্থান করছে, শরনার্থীরা সেচ্ছায় চলে যাবে এবং আর শরনার্থী অনুপ্রবেশের কোনো সুযোগ নেই জানালেন সেখানকার অবস্থানরত বিজিবি কর্মকর্তা। এখনও পর্যন্ত সরকারী ভাবে তাদের কাছে কোন ধরণের ত্রাণ তৎপরতা না চালানোর কারনে তারা স্বাস্থ্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
শরনার্থী রেদাকশে(৩৫), তিন ছেলে ও স্ত্রী। পরিবার মোট সদস্য পাঁচজন। তার বাড়ি খামংওয়া রোয়া,পালেটওয়া জেলা, চিন স্টেট, মায়ানমার। সে জানায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সীমান্ত পেরিয়ে এ পাড়ায় এসেছে, তাদের শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
আরো জানা গেছে, এক সপ্তাহ‘র বেশি ধরে থাকা এসব শরনার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও খাদ্য সংকট। অচিরেই খাদ্য সমস্যায় ভোগতে পারে, এমন আশঙ্কা করছে পাড়াবাসীর মধ্যেও। বিশুদ্ধ পানির অভাবে তাদের মধ্যে ডাইরিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে, অন্যদিকে পাহাড়ের প্রচন্ড শীতের মধ্যে শীতের পোষাক না পাওয়ার কারনে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।
আরো জানা গেছে, সরকারী তথ্য মতে শরনার্থীর সংখ্যা ১৬০ জনের মধ্যে ৬০জন শিশু আছে দাবী করা হলেও স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শরনার্থীর সংখ্যা রাখাইন,খ্যও এবং খুমি সম্প্রদায়ের মিলে ২০৩ জন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৭০ এর অধিক। তাদের অনেকে শরীরের চুলকানি ও ঠান্ডা জনিত শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত। অন্যদিকে বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকায় ঝিড়ি ও ঝর্না থেকে পানি পান করার কারনে বিশেষ করে শিশুরা ডাইরিয়া ও শীতের কারনে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।
আরেক শরনার্থী মংশে রাখাইন, তার বয়স (৩৭), সেও খামংওয়া পাড়া চলে আসে, সে বলেন, শীতের কারনে শিশুরা খুব কষ্ট পাচ্ছে, শ্বাসকষ্টে শ্বাস নিতে পারছেনা
গত বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমার থেকে আসা এক রাখাইন নারীকে পাশের একটি পাড়ায় নিয়ে সন্তান প্রসব করান স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা। আরো তিন থেকে চারজন গর্ভবতী নারী আছেন। দু-একদিনের মধ্যে তাদেরও সন্তান প্রসব হতে পারে।’ কিন্তু দূর্গম এলাকা হওয়ার কারনে সেখানে কোন ভাবেই এখনও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যায়নি।
এই ব্যাপারে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা: অংসুই প্রু বলেন, শরনার্থীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে এলাকা গুলোর স্বাস্থ্য কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গভীর অরণ্য ঘেরা বান্দরবান – মিয়ানমার সীমান্ত থেকে অন্তত ৩ দিন পাঁয়ে হেটে শরনার্থীরা জেলার চক্ষ্যংপাড়ায় প্রবেশ করে অবস্থান গ্রহন করে।