গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বান্দরবান। আর এতে করে কাঁচা সবজি পরিবহনে বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পুরো বাজার জুঁড়েই। বৃষ্টির অজুহাতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে গেছে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা, বেড়ে গেছে কাঁচামরিচের ঝাঁজও, সব ভোগ্য পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া।
গত ৫ জুলাই শুক্রবার ভোর না হতেই পার্বত্য জেলা বান্দরবানে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পুরো জেলা। সপ্তাহব্যাপী এই টানা বৃষ্টিতে সড়কে ওঠে পানি ,আর বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। এদিকে বন্যায় তলিয়ে গেছে সবজি ক্ষেত, অন্যদিকে বান্দরবানের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজারে সৃষ্টি হয়েছে সংকট। নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির অভাব ও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে মরিচ,বেগুন,কাকরলসহ অনেক সবজি, দামের কারনে হাত দেয়া যাচ্ছেনা ডিম ও আলুতে।
বান্দরবান বাজারে বাজার করতে আসা মো:ইব্রাহিম জানান,বৃষ্টির অজুহাতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে গেছে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা, বেড়ে গেছে কাঁচামরিচের ঝাঁজও। সাধারণ জনসাধারণ সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ।
এদিকে বিক্রেতারা বলছে বাজারে সবজির অভাব হচ্ছে এবং বান্দরবানে বন্যার কারণে তাদের মালামাল আনতে কষ্ট হচ্ছে আর বাজারে প্রত্যেক সবজির দাম বেড়েছে কয়েকগুন। বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। গত সপ্তাহে যে মরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল, তা এখন বেড়ে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠে গেছে।
বান্দরবান বাজারে বাজার করতে আসা জয়নুল আবেদিন জানান,সবজি পাওয়া যাচ্ছে তবে দাম বেশি, যে কাকরল ত্রিশ ৩০ কেজি ছিল ,বৃষ্টি তা বাড়িয়ে ৭০ টাকা করে দিল ।
বৃষ্টির অজুহাতে সব ধরনের সবজির দামও ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে বাজারভেদে প্রতি কেজি পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ থেকে ৭৫ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বান্দরবান বাজারের কাচাঁমাল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো:আবু বক্কর জানান, এক সপ্তাহের প্রবল টানা বৃষ্টি আর যান চলাচল বন্ধ থাকায় বান্দরবান বাজারে সবজির ঘাটতি রয়েছে। তিনি আরো জানান, সাংগু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাঁচা বাজার ডুবে অনেক ব্যবসায়ীর মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে ,এতে করে সবজির দাম বেড়েছে আর অন্যদিকে সরবরাহ না থাকায় অনেক সবজি বাজারে দেখা মিলছে না।
এদিকে বাজার মনিটরিং কর্মকর্তারা বলছে,গেল কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানে শাক-সবজি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অনেকটা বাড়লে ও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে মালামালের,বৃষ্টি কমে গেলে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে সবজি বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে।
কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের জেলা বাজার কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাশ বলেন, বৃষ্টিতে স্বাভাবিকভাবে সবজি ক্ষেতের অনেক ক্ষতি হয়েছে ,তবে সড়কে যানবাহন চলাচল করলে আমদানি বাড়বে। জেলা বাজার কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাশ আরো বলেন,বাজারে সবজির দাম বাড়লে ও আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই ,আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণে সজাগ আছি ,সাময়িকভাবে ক্রেতাদের অসুবিধা হলে ও এই সমস্যা শ্রীঘ্রই কেটে যাবে।
বাজারে দ্রুত পর্যাপ্ত সবজি সরবরাহ এবং বাজার মুল্য নিয়ন্ত্রনে প্রশাসন আরো বেশি কার্যকরি ভূমিকা রাখবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয় বাসিন্দাদের।