বান্দরবানে আলীকদম উপজেলা সদর হাসপাতালে পৌঁছার আগেই সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা হিররাম ম্রো (১৯) নামের এক মহিলা ডায়রিয়ায় মারা গেছে। পরিবারের সদস্য ও নিজে বেচেঁ থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেও প্রায় ৪ ঘন্টা নৌকা ও পায়ে হাঁটা পথ অতিক্রম করে সদরে আসলেও চিকিৎসা পাওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন হিররাম ম্রো। এভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একে একে ঝড়ে গেল পাহাড়ে বসবাস করা ম্রো জনগোষ্ঠির ১২টি প্রাণ।
গত শনিবার (১৯ জুন) উপজেলার করুকপাতা ইউনিয়নের ২নং ওয়াড়ের রুইতন কার্বারী পাড়ার বাসিন্দা হিররাম ম্রো ডায়রিয়ায় অবস্থা অবনতি হলে নবনির্মিত করুকপাতা সড়কের যোগাযোগ বিছিন্ন থাকায় আড়াই ঘন্টা হাটাপথ ও দেড় ঘন্টা নৌকায় করে সদরে চিকিৎসার জন্য আসার সময় মারা যান। বিকাল চারটায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়, তখন তিনি মারা যান।
স্থানীয় ও চেয়ারম্যান সূত্রে জানা যায়,১৯ জুন পর্যন্ত মোট ১২ জন ডায়রিয়ায় মারা গেছে, তার মধ্যে মেনলিউ পাড়া ও মাংরুম এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধীসহ ১০ জন ও সোনাবি পাড়া ও রুইতন কার্বারী পাড়া ১ জন করে ২ জন। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে ৬ জনের মৃত্যুর তথ্য থাকলেও বাকী ৬ জনের তথ্য নেই।
এনজিও কর্মী ও করুকপাতা ইউপি বাসিন্দা সাকনাও ম্রো বলেন, এখন পর্যন্ত ১২ জন মারা যাওয়ার তথ্য আছে। মাংরুম পাড়া মেনলিউ পাড়া এখন অনেক সুস্থ ও সবাই ঘরে ফিরেছে। দুর্গমের পাড়াগুলোর কি অবস্থা বলা যাচ্ছে না কারণ যোগাযোগের কোন মাধ্যম নেই। হিররাম ম্রোকে তার ভাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। প্রায় চার/সাড়ে চার ঘন্টা সময় লাগে রুইতন পাড়া থেকে সদরে আসতে।
৪ নং করুকপাতা ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, হিররাম ম্রো হাসপাতালে পৌছার আগেই মারা গেছে। তাকে রাতেই পাড়ায় নিয়ে দাহ করা হয়েছে। যে পাড়ায় ডায়রিয়া রোগী পাওয়া যায় দুয়েকদিন পর সেখানে আরও পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ১২জন মারা গেছে, এখন সব স্বাভাবিক, সব পাড়ার খবর নিচ্ছি।
উপজেলার স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা.মো. মাহতাব উদ্দিন জানান,রুইতন কার্বারী পাড়ার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃতদেহ হাসপাতালে আনার তথ্য নিশ্চিত করলেও তিনি কি কারণে মারা গেছে তা সঠিক ভাবে বলতে পারছিনা। যিনি নিয়ে এসেছেন তিনি আরেক পাড়ার বাসিন্দা।