১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনা কর্তৃক নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্বিচারে গণহত্যা বিশ্বের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়ের সংযোজন করে। বিশ্বের স্বাধীনতাকামী সাধারণ জনগনকে এরূপ হত্যার নজির খুব কমই দেখা যায়। সামরিক শাসক ইয়াহিয়ার নির্দেশে জেনারেল টিক্কা খানের নেতৃত্বে নিরীহ বাঙালিদের উপর সংঘটিত হয় ইতিহাসের নির্মম হত্যাকান্ড। এ গণহত্যা শুধু একটি রাতের হত্যাকান্ডই ছিল না, এটি ছিল মুলত: বিশ্ব সভ্যতার জন্য এক কলঙ্কজনক জঘন্যতম গণহত্যার সূচনা মাত্র।
আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চ। শোকস্মৃতিবাহী গণহত্যা আর নিষ্ঠুর ধ্বংসযজ্ঞের কালরাত। দিবসটি বাংলাদেশে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। জাতি গভীর বেদনায় নানা আয়োজনে স্মরণ করবে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাপুরুষোচিত হামলার শিকার নিরীহ শহীদ আর প্রতিরোধ সংগ্রামে আত্মদানকারী বীর যোদ্ধাদের। সাধারণভাবে জেনোসাইড বা গণহত্যা বলতে বোঝায় নির্দিষ্ট একটি ভৌগোলিক অংশে সুচিন্তিতভাবে একযোগে বা অপেক্ষাকৃত কম সময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ কিংবা কোন জাতিকে হত্যা করা।
১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় যে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় তাতে মাত্র তিন মাসে আট লক্ষ লোককে হত্যা করা হয়। যেখানে গণহত্যা বলতে কোন জাতিকে নির্মূল করার লক্ষ্যে জোরপূর্বক দেশ থেকে বিতাড়ন, পরিকল্পিতভাবে হত্যা, মানসিক নির্যাতন, জীবন মালের চরম ক্ষতি সাধন ইত্যাদি বিষয়কে বোঝানো হয়েছে।
গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তিবিষয়ক ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত রেজুলেশন ২৬০ (৩) এর ধারা অনুযায়ী কোন একটি জাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, ধর্মীয়গোষ্ঠীকে আংশিক বা পূর্ণাঙ্গভাবে ধ্বংসের জন্য এর সদস্যদের হত্যা, শারীরিক ও মানসিক চরম ক্ষতিসাধন, পরিকল্পিতভাবে লোকজনের জীবনের বা শরীরের আংশিক ক্ষতি সাধন, পরবর্তী প্রজন্ম বিকাশে বাধাদান, কোন জাতি বা গোষ্ঠীর শিশুদের জোর করে অন্য জাতি বা গোষ্ঠীতে স্থানান্তর ইত্যাদি গণহত্যার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। উক্ত সনদে বর্ণিত অপরাধের যে বিবরণ তার সঙ্গে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংসতার পুরোপুরি মিল পাওয়া যায়।
তাই আমরা বলতে পারি, ১৯৭১ সালের গণহত্যা আর্মেনিয়া, নানকিং, কম্বোডিয়া, বসনিয়া, রুয়ান্ডা এবং দারফুরের গণহত্যার চেয়েও ভয়ংকর ও নিষ্ঠুরতম।
বিগত শতাব্দীর ষাট দশকের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের মোট ৩১৩ টি আসনের মধ্যে ১৬৭ টি এবং প্রাদেশিক পরিষদে পূর্ব পাকিস্তানে মোট ৩১০ টি আসনের মধ্যে ২৯৮ টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তৎকালীন জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। কিন্তু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নেয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন ৭ই মার্চের এতিহাসিক ভাষণের এর মাধ্যমে। তার নেতৃত্বে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন একাত্তরের মার্চে রুপ নেয় স্বাধীনতার সংগ্রামে।
পাকিস্তানি সেনারা ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যে গণহত্যার অভিযান চালিয়েছিল তার নাম দেয় ’অপারেশন সার্চলাইট’। ২৫ মার্চ এ অপারেশন সংঘটিত হলেও মূলত: মার্চের প্রথম থেকে এর প্রস্তুতি চলতে থাকে। একদিকে ১৬ মার্চ থেকে বৈঠক শুরু হয়, অন্যদিকে ১৭ মার্চ জেনারেল টিক্কা খান, মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি অপারেশন সার্চলাইট চুড়ান্ত করেন। ১৯ মার্চ পূর্ব বাংলার ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বাঙালি সৈনিকদের নিরস্ত্রকরণ শুরু হয়ে যায়। জেনারেল ইয়াহিয়া তার সামরিক উপদেষ্টা হামিদ খান, জেনারেল টিক্কা খান, জেনারেল পীরজাদা, জেনারেল ওমর প্রমুখকে নিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এ সামরিক প্রস্তুতিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়। এ সময় প্রতিদিন ৬টি থেকে ১৭টি পর্যন্ত পিআইএ ফ্লাইট বোয়িং ৭০৭ বিমান সৈন্য ও রসদ নিয়ে ঢাকা আসতো। অসংখ্য সৈন্য ও অস্ত্র বোঝাই জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে অপেক্ষা করে। ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরে এম ভি সোয়াত নামক জাহাজ থেকে অস্ত্র ও রসদ খালাস হয়। সব প্রস্তুতি শেষ করে ২৫ মার্চ গণহত্যার জন্য বেছে নিয়ে মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিকে ঢাকা শহরের মূল দায়িত্ব দেয়া হয়।
২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু-ইয়াহিয়ার সিরিজ বৈঠক ব্যর্থ হলে জেনারেল ইয়াহিয়া বাঙালি হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়ে বিকেলে ঢাকা থেকে পালিয়ে যান। বাংলা তখন অগ্নিগর্ভ। উত্তাল দিন শেষে ঘনিয়ে আসে আঁধার। তখনো কেউ জানতে পারেনি কী ভয়ংকর, নৃশংস ও বিভীষিকাময় রাত নামছে বাঙালির জীবনে। রাত সাড়ে ১১টায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে জীপ, ট্রাক বোঝাই করে নরঘাতক কাপুরুষ পাকিস্তানের সৈন্যরা ট্যাঙ্ক সহ আধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে ছড়িয়ে পড়লো শহর জুড়ে। মুর্হুমুহু গুলি বর্ষণের মাধ্যমে হানাদার বাহিনী দানবীয় নিষ্ঠুরতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র মানুষের ওপর। শুরু হলো বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞ আর ধ্বংসের তন্ডবলীলা। আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে গর্জে উঠে অত্যাধুনিক রাইফেল, কামান, মেশিনগান, মর্টার। হতচকিত বাঙালি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। মানুষের কান্না আর আর্ত চিৎকারে ভারি হয়ে ওঠে শহরের আকাশ। পাকিস্তানি সেনারা হামলে পড়ে পুরান ঢাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, জহুরুল হক হল, রোকেয়া হল, বুয়েট, মেডিক্যাল কলেজ ও সংলগ্ন এলাকা, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর (পরে বিডিআর, বর্তমানে বিজিবি) হেডকোয়ার্টার, ঢাকা বিমান বন্দরের অভ্যন্তরে, তেজগাঁও, মিরপুর, ইন্দিরা রোড, ধানমন্ডি, কলাবাগান ও ইত্যাদি এলাকায় ব্যাপক হত্যাকান্ড ও পাশবিক নির্যাতন চালায়। একইভাবে দেশের অন্যান্য জায়গায় হত্যাকান্ড শুরু হয়।
হতচকিত বাঙালি সে রাতেই প্রতিরোধে জেগে ওঠে। যার যা আছে তা নিয়ে স্থানে স্থানে সৃষ্টি করা হয় প্রতিরোধ-ব্যারিকেড। রাজারবাগ পুলিশ সদর দপ্তরে পাকিস্তানি সেনাদের সাঁড়াশি অভিযানের মুখেও বাঙালি পুলিশ সদস্যরা আত্মসমর্পণ না করে গড়ে তোলেন প্রতিরোধ। যদিও শত্রুর ট্যাঙ্ক আর ভারী মেশিনগানের ক্রমাগত আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিতে হয় তাঁদের। একইভাবে ইপিআর হেডকোয়ার্টারেও বাঙালি সেনারা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। সে রাতে পিপলস ডেইলি, গণবাংলা, দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবেও অগ্নিসংযোগ, মর্টার শেল ছুড়ে ধ্বংসÍুপে পরিণত করে পাকিস্তানি হানাদাররা।
বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও ওই রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এর আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং তা ওয়্যারলেস যোগে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাবাণী শোনামাত্রই স্বাধীনতার প্রত্যয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। এরপর রাজনৈতিক কর্মী, বাঙালি সৈনিক আর সাধারণ মানুষের সম্মিলিত স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, বিপুল প্রাণহানি আর ধ্বংসযজ্ঞের পর ১৬ ডিসেম্বর উদিত হয় স্বাধীনতার সূর্য। আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
নিউইয়র্ক টাইমস্ ১লা এপ্রিল ১৯৭১ সালে এক প্রতিবেদনে জানায় ২৫ মার্চ রাতে প্রায় ২৪ হাজারের বেশি মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। অষ্ট্রেলিয়ার সিডনি মর্নিং হেরাল্ড পত্রিকার ভাষ্যমতে, শুধুমাত্র ২৫ মার্চ রাতেই প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয় যা গণহত্যার ইতিহাসে এক ভয়াবহ ঘটনা। পূর্ব পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল, তাতে বলা হয় ১লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষ নির্মমভাবে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়।
সাংবাদিক ও লেখক আন্থনি মাসকারেনহাস লন্ডনের সানডে টাইমস্ পত্রিকায় ১৩ জুন ১৯৭১ প্রত্যক্ষদর্শীর প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এ প্রতিবেদনে দেখা যায় শুধুমাত্র খুলনার চুকননগরেই ২০ মে প্রায় দশ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল আর্চার কেন্ট ব্লাড পাকিস্তানি সৈন্যদের ভয়াবহ নৃশংসতার বিবরণ দিয়ে অসংখ্য টেলিগ্রাম পাঠিয়েছিলেন ওয়াশিংটন পররাষ্ট্র দপ্তরে, যেখানে তিনি এ নিধনযজ্ঞকে সিলেক্টিভ জেনোসাইড নামে আখ্যায়িত করেন। এছাড়া ’গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’ বাংলাদেশের এ হত্যাযজ্ঞকে বিশ শতকের পাঁচটি ভয়ংকর গণহত্যার অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়।
১৯৭১ র্নিমমতা এতই জঘন্যতম ও আলোচিত ছিল যে, তৎকালীন সময়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, ভারতীয় লোকসভা, জাপানের ডায়েটসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে পাক বাহিনীর নৃশংসতা ও গণহত্যা নিয়ে আলোচনা হয়। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের পরপর পাকিস্তান সরকারের বেশ কিছু প্রতিবেদনেও বড় পরিসরে এ ধরনের নৃশংসতার তথ্য পাওয়া যায়। যার বিবরণ ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ।
শুধু ২৫ মার্চ নয় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাস জুড়ে পাকিস্তানি হানাদাররা এমনই র্ব্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল যার নিষ্ঠুরতা ও সংখ্যার দিক দিয়ে রুয়ান্ডার গণহত্যাকে ছাড়িয়ে যায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি ও তাদের সহায়তাকারী দলগুলো ত্রিশ লক্ষ ব্যক্তিকে হত্যা, চার লক্ষ নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে। তাদের বর্বরতার কারণে তিন কোটি বাঙালি অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়। ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় আরো এক কোটি বাঙালি। ব্যাপকহারে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সম্পদ লুন্ঠণ, ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালবার্ট ও জনসম্পদ ধবংস করে। যা বিশ্বব্যাপী প্রতিবেদন আকারে প্রচারিত হয়।
দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে যখন তাদের পরাজয় অনিবার্য হয়ে ওঠে তখন বাঙালিকে মেধাশূণ্য করার লক্ষ্যে আলবদর, আলশামস ও রাজাকারদের সহযোগিতায় ব্যাপক নিধনযজ্ঞ চালায়। তারা অধ্যাপক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, শিল্পী, প্রকৌশলী, সংস্কৃতিকর্মী, লেখকসহ বিপুলসংখ্যক পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিতভাবে যাতে বাঙালি জাতি কোন দিন মাথা উচুঁ করে দাড়াঁতে না পারে।
একদিকে পরাজয়ের লজ্জা অন্যদিকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, নৃশংসতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় এ দুইটি এড়াতেই নতুন প্রজন্মকে ১৯৭১ সালে সঠিক ইতিহাস জানতে দেয়না পাকিস্তান। জাতি হিসেবে নিজের অপরাধের দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা উল্টো সেই সময়ের সব নৃশংসতা অস্বীকার করা এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যাচার চালিয়ে যাওয়ার পথে এখনো হাটঁছে পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় ৪৬ বছর পর ২৫ মার্চকে জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের স্বীকৃতির লড়াইয়ে নেমেছে বাংলাদেশ।
বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ১১ মার্চ দশম জাতীয় সংসদের ১৩ তম অধিবেশনে ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের জন্য নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যা ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আর তারই ধারাবাহিকতায় আজ সারা দেশে তৃতীয়বারের মতো পালিত হচ্ছে ’জাতীয় গণহত্যা’ দিবস।
এর পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার আর্ন্তজাতিক অঙ্গনের স্বীকৃতি অর্জন করার লক্ষ্যে নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সাথে নিরলসভাবে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। অচিরেই আমরা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাব বলে আশা রাখছি।
অবশেষে, একাত্তরের বীভৎস গণহত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। নৃশংস এ হত্যাকান্ডের ভয়াবহতা কেউ কোনো দিন ভুলতে পারে না। এমন গণহত্যা আর কোথাও যাতে না ঘটে গণহত্যা দিবস পালনের মাধ্যমে সে দাবিই বিশ্বব্যাপী প্রতিফলিত হোক।
সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।
জয় বাংলা
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
লেখক- মো. রাশেদুল হাসান (রাশেদ)।
প্রভাষক (পৌরনীতি ও সুশাসন)
বান্দরবান কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ
সদর, বান্দরবান পার্বত্য জেলা ।
প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। পাহাড়বার্তার -এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য পাহাড়বার্তা কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না