অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধে রাঙামাটিতে মহাসমাবেশ

NewsDetails_01

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবীতে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ ও মহাসমাবেশ
পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, গুম, চাঁদাবাজি এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে সচেতন নাগরিক কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটিতে মহসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ১১টায় রাঙামাটি শহরের কোর্ট বিল্ডি এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা রাষ্ট্র জুম্মল্যান্ড গড়ে তোলার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছে। তারা আলাদা মুদ্রা, আলাদা পতাকা বানাচ্ছে।
তিনি বলেন,এখানে কিছু অসৎ অফিসার রয়েছে, যারা অবৈধ অস্ত্রধারীদের সহযোগিতা করছে। দীপংকর জানান, স্থানীয় সরকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী রোববার (২৮ জানুয়ারী) সকালে ঠিকাদারদের ডেকে বলেছেন একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জন্য ৫% কমিশন দিতে হবে। কমিশন না দিলে কাজ বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান। এ ঘটনার খোঁজ নেওয়ার জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দীপংকর জানান, রাঙামাটি অঞ্চলের প্রধান ব্যবসা কাঠ ও বাঁশ। আর ব্যবসা পরিচালনার জন্য চাঁদাবাজদের চাঁদা সাথে অগ্রিম ৫০হাজার টাকা দিতে হয়। যেন শিয়ালের কাছে মুরগী বাগার মতো।
দীপংকর আরও জানান, কোন সন্ত্রাসীকে আটক করলে সন্তু লারমা প্রশাসনকে ফোন দেয় ছেড়ে দেয়ার জন্য। এসময় সন্তু লারমার প্রতি আহব্বান জানিয়ে দীপংকর বলেন, আসুন অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলনে সামিল হয়। কারণ অস্ত্রধারীরা কারো আপন হতে পারে না।
প্রশাসনের উদ্দেশ্য দীপংকর বলেন, আপনারা অভিলম্বে এসব সন্ত্রাস, চাদাঁবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন না হলে আমরা আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় আলাদা ভাবে সমাবেশ, আন্দোলন গড়ে তুলবো। দীপংকর এসমসয় সমাবেশ সফল করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
জাতীয় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেছেন, যেখানে, চাঁদাবাজি,সন্ত্রাসী চলবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সন্ত্রাসীদের আর চাঁদা না দিতে জনগণের প্রতি আহব্বান জানান এমপি। এমপি বলেন, আমার. আপনাদের থেকে নেওয়া চাঁদার টাকায় সন্ত্রাসীর অস্ত্র কিনে সাধারণ মানুষকে হত্যা, গুম করে এ পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করে তুলছে, আমাদের হত্যা করছে।
ওইদিন সকালে সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক দীপংকর তালুকদারের নেতৃত্বে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট বিল্ডি এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র সভাপতি বেলায়েত হোসেন, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, বাস মালিক সমিতির সভাপতি মঈনুদ্দীন সেলিম, ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি সেকান্দর, কাপ্তাই উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অংসুসাইন চৌধুরী, কাউখালী উপজেলা সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক অংসু প্রু চৌধুরী, লংগদু উপজেলা সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক জানে আলমসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে সকাল থেকে সমাবেশকে ঘিরে পুরো শহর নি:স্তব্দ হয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষ সেদিন নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং গাড়ি বন্ধ রেখে ওই সমাবেশে যোগদান করে। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এ মহাবেশ শেষ হয় দুপুরে।

আরও পড়ুন