আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা

বান্দরবান পৌর নির্বাচন

NewsDetails_01

এখনও দিনক্ষন নির্দিষ্ট না হলেও বান্দরবান পৌরসভার মেয়র পদে উপ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভব্য প্রার্থীদের নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। বিএনপি থেকে নির্বাচন নিয়ে এখনও সাড়া না থাকলেও আওয়ামী লীগ থেকে কারা হচ্ছেন প্রার্থী, আর দল থেকে মনোনয়ন পাবেন কে, এমন প্রশ্ন এখন মুখে মুখে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল বান্দরবানের পৌর মেয়র ইসলাম বেবী মারা যান, ফলে মেয়র পদটি শূন্য হয়ে পড়লে মেয়র পদের উপ নির্বাচন নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তোড়জোর শুরু হয়। অনেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে গোপনে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে তদবির করছেন, কেউ কেউ সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভোটারদের সাথে নতুন ভাবে সম্পর্ক তৈরী করছেন।

জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ, পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৌরভ দাশ শেখর, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী, এছাড়া আলোচনায় রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট ইকবাল করিম এর নাম।

এই ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর বলেন, আমি গত ৩টি পৌর নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম, তবে এবার শতভাগ আশাবাদি দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।

জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র আরো জানায়, দলীয় মনোনয়নের জন্য এই বিষয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষন করলেও অন্যদের ভাবনা, দলের শীর্ষ পর্যায়ের গ্রিন সিগন্যাল পেলেই মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে মাঠে নামবেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদি, আর দল যদি অন্য কাউকে দেয় তাহলেও দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে কাজ করবো।

NewsDetails_03

১৯৮৪ সালে ১৫.৮৮ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে বান্দরবান পৌরসভা ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে গঠিত হলেও ২০০১ সালে ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভাতে উন্নিত হয়। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভায় বর্তমানে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। মোট ভোটার ৩৩ হাজার ৭৪৭জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৮ হাজার ৬০১জন, মহিলা ভোটার ১৫ হাজার ১৪৬জন।

এদিকে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা না হলেও নির্বাচনী আইন অনুসারে পৌর নির্বাচন জুলাই মাসে অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। তাই অনেকটা নিরবে পৌর নির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে পৌর শহরে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কর্মীদের মন জয় করতে আর দলের সিনিয়র নেতাদের কাছে আর্শিবাদ পেতে ছুটে যাচ্ছেন। এখন থেকেই দলীয় টিকিট নিশ্চিত করতে চালিয়ে যাচ্ছেন জোর চেষ্টা।

এই ব্যাপারে আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র শেখর দাশ বলেন, দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে নির্বাচন করবো, অন্য প্রার্থী দিলে তাকেই সমর্থন করবো, দলের বাইরে কেউ যাবেনা আশা করি।

আরো জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রয়াত মেয়র ইসলাম বেবি পরপর দুইবার মেয়র নির্বাচিত হলেও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে দূরত্ব তৈরী করা, মামলা দিয়ে হয়রানি, নিজস্ব বলয় তৈরীর মাধ্যমে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে, ফলে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ায় এবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচন করবে সতর্কতার সাথে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন, দলের নিজস্ব জরিপ, অসম্প্রদায়িক, কর্মী বান্ধব, তরুণ, ক্লিন ইমেজ বিবেচনা করে প্রার্থী বেছে নিতে পারে দলটি।

এই ব্যাপারে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা বলেন, পৌর নির্বাচনে প্রবীন নয়, যাদের বয়স ৫০ এর ভেতর ক্লিন ইমেজের এমন তরুণ প্রার্থীকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের তারিখ ঘোষনার পর দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন, সেদিকে তাকিয়ে আছে আওয়ামী লীগের সম্ভব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী থেকে শুরু করে দলটির স্থানীয় নেতা ও পৌরবাসী।

আরও পড়ুন