আনাই মগিনী’র পরিবারকে সঞ্চয়পত্র প্রদান করলেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক

NewsDetails_01

অনুর্ধ ১৯ সার্ফ ফুটবল গেইমস এ ফাইনালের একমাত্র গোল দাতা আনাই মগিনী ও তার বোন আনুচিং মগিনীর খাগড়াছড়ি সদরের সাত ভাইয়া পাড়া গ্রামের বাড়ী পরিদর্শন করলেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ দুই কৃতী কিশোর ফুটবলারের জন্য দুই লক্ষ করে চার লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র করে দেয়ার ঘোষণা দেন।

আজ বুধবার দুপুরে তিনি ঝুঁকিপূর্ন সাঁকো পেরিয়ে তাদের বাড়িতে পৌঁছলে বাবা রিপ্রু মগ ও মা আপ্রুমা মগিনী জেলা প্রশাসককে স্বাগত জানান। পরিদর্শন শেষে তিনি পরিবারের সুখ দুঃখের গল্প শুনেন। জানতে চান তাদের কি কি সমস্যা রয়েছে। এরপর তাদের চলার মতো কিছু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

এসময় জেলা প্রশাসক তাদের পারিবারিক সমস্যার সমস্যা সমাধানে সুপেয় পানি জন্য একটি ডিপ টিউবওয়ের ও বৈদ্যুতিক সুবিধার জন্য ৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি’র বন্দোবস্ত করে দেন। জেলা প্রশাসক আনাই-আনুচিং সহোদরার পরিবারের আর্থিক স্থায়িত্বশীলতার জন্য স্বজনদের সুবিধাজনক সময়ে সরকারি চাকরি’র মাধ্যমে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেন। তাদের বাড়িতে যাওয়ার যে বাঁশের সাঁকো রয়েছে তার পরিবর্তে একটি কালভার্টের জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান।

সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় জেলা প্রশাাসক বলেন, এই খেলোয়াড় দুই বোন আমাদের জেলার গর্ব। তাদের নিয়ে আমাদের স্বপ্ন দেখতে হবে কিভাবে তারা এই জেলার মান ধরে রাখতে পারে। তাই সকল জনপ্রতিনিধি, ক্রীড়া সংগঠন ও বিত্তবানদের এদের প্রতি আলাদা নজর রাখা দরকার। তাহলে এরাই আমাদের জেলার মান বৃদ্ধি করতে পারবে বিশ্ববাসীর কাছে।

NewsDetails_03

তিনি আরও বলেন, আমি তাদের জন্য যে অর্থ এফডিআর সঞ্চয়পত্র করে দিচ্ছি তা থেকে যে লভ্যাংশ পাবে তা দিয়ে কিছুটা হলেও পরিবারের সচ্ছলতা আসবে। অন্য কোথাও থেকে যদি এমন সহযোগিতা পায় তাহলে তাদের অভাবের মধ্যে দিন কাটাতে হবে না। তাই সকলের উচিৎ যার যার অবস্থান থেকে তাদের দিকে এগিয়ে আসা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ির কৃতী সন্তান ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কঙ্কন চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা, আনুচিং মগিনী, জেলা ক্রীড়া সংস্থা’র অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ধুমকেতু মারমা, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন’র সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী, নারীনেত্রী বাঁসরী মারমা, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ক্যজরী মারমাসহ এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তি বর্গ।

জেলা প্রশাসকের বাড়ি পরিদর্শন নিয়ে ফুটবল কন্যা আনুচিং মগিনী বলেন, আমরা দুই বোন একসাথে খেলি বাংলাদেশ দলে। আমরা চেষ্টা করি এই জেলার মান ধরে রাখতে। যাতে আমাদের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ এই জেলাকে মনে রাখে।

তিনি আরও বলেন, আমরা গরীর পরিবারের সন্তান হওয়ায় বাবা-মা আমাদের সবকিছুতে সাপোর্ট করতে পারেনা। আমরাও অর্থিক সংকটের কারণে অন্যদের মতো সব কাজ করতে পারিনা। এখন জেলা প্রশাসক আমাদের জন্য যে সঞ্চয়পত্র করে দিচ্ছে তা দিয়ে আমাদের অনেক উপকার হবে। এটির লভ্যাংশের টাকা দিয়ে প্রতি মাসে আমাদের অনেক কিছু করা সম্ভব হবে। আমরা ওনার প্রতি কৃতজ্ঞ। ওনি এতো কষ্ট করে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে আমাদের বাড়িতে আসবে আমাদের কল্পনাও ছিলোনা।

উল্লেখ্য, বিগত ২২ ডিসেম্বর তারিখে অনুর্ধ ১৯ সাফ গেইমস এ নারী ফুটবল টিমে একমাত্র আনাই মগিনী গোলে জয়লাভ করে বাংলাদেশ টিম।

আরও পড়ুন