উন্নয়ন বোর্ডের সোলার প্যানেলে আলোকিত হচ্ছে রুমার ২৫০ পরিবার

NewsDetails_01

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সোলার প্যানেল বিতরণ
সরকার ঘোষিত ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বিতরণ এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্মসুচির আওতায় রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের সোলার প্যানেল হোম সিস্টেমে আলোকিত হতে যাচ্ছে ২শ ৫০পরিবার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রত্যান্ত এলাকা আলোকিত করতে একটি প্রকল্পের আওতায় পাইন্দু ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো প্রাথমিকভাবে ১শটি পরিবারকে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিহীন দুর্গম এলাকায় এখন সবার ঘরে ঘরে অন্ধকার কাটিয়ে আলোকিত হবে পাড়া, এমনই প্রত্যাশা স্থানীয়দেরও। বৃহস্পতিবার বিকালে “পাহাড়বার্তা”কে পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা তার কার্যালয়ে এক খোলামেলা আলাপচারিতায় এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি পাহাড়বার্তাকে আরো জানান, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের আন্তরিক সহযোগিতায় রুমা উপজেলায় প্রথমবারের মতো পাইন্দু ইউনিয়নের ২৫০টি পরিবারের জন্য সোলার প্যানেল বরাদ্ধের অনুমোদন পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিহীন এলাকায় আলোকিত করতে দুর্গম তংমক পাড়া, সেংগুম পাড়া, পড়ূয়া পাড়া ও নিয়াংক্ষ্যাং পাড়া মোট ২৫০পরিবারকে নির্বাচিত করে বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, গত ৩ মে থেকে ধাপে ধাপে ১০০পরিবারকে বিতরণ করা হয়। তবে পাইন্দু ইউনিয়নের পর্যায়ক্রমে আগামী ৩০জুনের মধ্যে বাকী ৯শতাধিক পরিবারকে বিরতণ করা হবে। প্রতিটি সোলার প্যানেল ৬৫ওয়ার্ড ক্ষমতা সম্পন্ন। এসব সোলার প্যানেল কয়েকদিনের মধ্যে প্রত্যেকটি পরিবারের বাড়িতে স্থাপিত হবে। তারপর পাড়ার লোকজনকে আর অন্ধকারে থাকতে হবেনা। দীর্ঘদিন যাবত নিরবছিন্ন অন্ধকারে নিমজ্জিত পাড়াগুলো এখন থেকে রাতেও আলোকিত হবে। এতে সব চেয়ে লাভবান হবে শিক্ষার্থীরা। কুপি বাতির ব্যবহার বাদ দিয়ে এখন শিক্ষার্থীরা রাতে অনাসয়ে তাদের পড়ালেখা করতে পারবে।
উহ্লামং মারমা আরো জানান, ঘরের বয়স্ক নারীরাও রাতে তাঁত বুননের কাজ কোনো সমস্যা থাকবেনা। এই সোনাল প্যানেল হোম সিস্টেম আলোকিত আলোয় পুরুষরাও রাতে থ্রুংসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করে নিতে পারবে। এখন আর কাউকে সেই দিনের আলো আর অপেক্ষা করতে হবেনা।
এসময় ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং পাহাড়বার্তাকে আরো জানান, আওয়ামী সরকার রুমা উপজেলায় রুমা সেতু নির্মান,কলেজ নির্মানসহ এলাকার রাস্তাঘাটসহ সামগ্রিক উন্নয়ন করছে। তাই আগামি সংসদ নির্বাচনে বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করার আহবান জানাচ্ছি।
পাইন্দু ইউনিয়নের দুর্গম তংমক পাড়ার বাসিন্দা ঞ্রোথোয়াইচিং মারমা প্রতিবেদককে বলেন, তার বাড়ি দুর্গম তংমক পাড়ায়, এই সোলার প্যানেল বিনামূল্যে পেয়ে মহাখুশি, যা কেনার সামর্থ ছিলনা তার। রাতে আমার ছেলে-মেয়েরা পড়তে পারবে আর নিজেও ছোটখাটো কাজ করতে পারবো।
এসময় ঞোথোয়াইচিং কাঁধে সোলার প্যানেল ও তারের ব্যান্ডেল হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সে “পাহাড়বার্তা”কে বলেন এই সোলার প্যানেল পাওয়ার জন্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ও ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং এর সেবামূলক কাজ জীবনে কখনো ভুলতে পারবেনা।
এদিকে সোলার প্যানেল হোম সিস্টেম প্রকল্পের তিন পার্বত্য জেলার সমন্বয়কারি হাসান শাহরিয়ার সোলার প্যানেল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানান, সৌর বিদ্যুৎ হতে সঠিক ভোল্টেজ পেতে ১০-১৫দিনের মধ্যে ভেজা নরম কাপড় দিয়ে প্যানেল উপরিভাগ পরিস্কার করতে হবে। রক্ষণা বেক্ষণের জন্য উপকাভোগীদের স্থানীয় কোনো ব্যাংকে হিসাব খোলা ও সাধ্যমত সঞ্চয় রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বান্দরবানের জেলায় দায়িত্বরত টেকনিক্যাল অফিসার অশুতোষ চাকমা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের এই প্রকল্পের আওতায় থানচি উপজেলার রেমাক্রী ইউনিয়নের চলতি অর্থবছরে ২৫০পরিবার এবং গত অর্থ বছরে তিন্দু ইউনিয়নের ২৩৬টি পরিবারকে সোলার প্যানেল হোম সিস্টেম বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের দুর্গম এলাকার ১শ পরিবারের মাঝে এই সোলার প্যানেল স্থাপিত হয়েছে।

আরও পড়ুন