এসময় তদন্ত দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলের রাস্তার দুপাশে পাহাড়ের আশপাশ ভালভাবে পর্যবেক্ষন করেন এবং হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের চেষ্টা করেন। পরে বাঘাইছড়ি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসাধীন আহতদের সাথে ও নির্বাচনের দিন গাড়িতে থাকা কর্মকর্তাগনসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। একই সাথে তদন্ত কমিটি হতাহতদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিও নিরুপন করার চেষ্টা করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান দীপক চক্রবর্তী জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আহতদের সাথে কথা বলে যা বুঝেছি, এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। রাস্তার পাশে পাহাড় ও জঙ্গল থাকায়, আগে থেকে উৎ পেতে থাকা অস্ত্রধারীরা খুব কাছে থেকেই উপুর্যপরি গুলি চালিয়েছে। আমরা আরো বেশি তথ্য সংগ্রহে কাজ করে যাব, এখনই পুরোপুরি কিছু বলা যাবে না। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুমিকা কি ছিল সেটাও মাথায় রেখে এগুচ্ছি। সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তবেই চুড়ান্তভাবে বলা যাবে ঘটনাটি কেন ঘটেছিল।
তদন্তকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) আশীষ কুমার বড়ুয়া, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ, বাঘাইহাট জোনের উপ অধিনায়ক মেজর আশরাফ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সাদেক আহমেদ, চট্টগ্রাম ৩০ আনসার ব্যাটালিয়নের পরিচালক ও অধিনায়ক মোঃ নুরুল আমিন ও কমিটির সদস্য সচিব রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির সদস্য সচিব রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করা হবে।
বাঘাইছড়ি থানার ওসি মঞ্জুর আলম বলেন,বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তদন্ত দল বাঘাইছড়ির বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা সড়কের নয় মাইল এলাকায় পরিদর্শনে যান। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন ছাড়াও বাঘাইছড়ি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের সাথে কথা বলেন এবং থানায় নিয়ে ঘটনার স্বীকার গাড়িগুলিও ভালভাবে দেখে আলামত সংগ্রহের চেষ্টা করেন।
এর আগে তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার সকালে রাঙ্গামাটি থেকে সড়ক পথে খাগড়াছড়ি হয়ে বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা সড়কে ৯ কিলো এলাকার ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
প্রসঙ্গতঃ গত ১৮ মার্চ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন শেষে ভোট কেন্দ্র থেকে ফেরার পথে বাঘাইছড়ি উপজেলায় বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা সড়কের নয় মাইল এলাকায় একদল অস্ত্রধারীদের গুলিতে প্রিসাইডিং অফিসারসহ সাতজন নিহত ও ১৪ জন আহত হন। পরে ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন,নিহত আহতদের জানমালের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
