করোনাকালে যেমন চলছে বান্দরবানের পত্রিকা হকারদের জীবন

NewsDetails_01

করোনার এই ক্রান্তিকালে ভালো নেই বান্দরবানের ৭টি উপজেলার অর্ধ শতাধিক পত্রিকার হকাররা। তপ্ত রোদ আর বৃষ্টি, এমনকি পাহাড়ের তীব্র শীতে দেশের মানুষের সুখ,দু:খ, আনন্দ-বেদনার খবর আপনার কাছে পৌঁছে দেন, সেই পত্রিকা ফেরি করা হকাররা আজ ভালো নেই। তারা অনেক কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

করোনা মহামারির কারণে সরকারি-বেসরকারী অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে সংবাদপত্রের গ্রাহক ও পাঠক সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ায় পত্রিকা বিক্রি কমার কারনে কমেছে হকারের আয়ও। এতে করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মানুষের দুয়ারে সংবাদ পৌঁছে দেয়া এই মানুষগুলো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহামারি করোনার আগে বান্দরনান পৌর এলাকা জুঁড়ে ১১জন হকার প্রতিদিন ১ হাজারের বেশি পত্রিকা বিলি করতেন। সেখানে করোনা মহামারির কারণে এখন কমে আড়াইশোর মতো দাঁড়িয়েছে।

পত্রিকার হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনার মহামারির কারণে বিভিন্ন সরকারি অফিস করোনা ছড়ানোর ভয়ে পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দেয়। জেলা ৬টি উপজেলা ছাড়া শুধুমাত্র জেলা শহরের বিভিন্ন সরকারি অফিসে ১ হাজার পত্রিকা বিলি করতেন হকাররা। এখন অনেক জায়গায় পত্রিকা নেয়া বন্ধ রয়েছে।

NewsDetails_03

বান্দরবান পৌর শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেওয়া পত্রিকার হকার মোহাম্মদ আলী জানান, অনেক ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে এখন পত্রিকা রাখা হয় না। ব্যবসায়ীরাও দোকানে পত্রিকা রাখেন না। গত এক সপ্তাহে ব্যাংক বন্ধ ও কঠোর লক ডাউনের কারণে পত্রিকা আনা বন্ধ করে দিয়েছি। আজ আবার পত্রিকা আনা শুরু করেছি।

পত্রিকার আরেক হকার মং বলেন, ‘করোনার কারণে প্রতিদিন পত্রিকা বিক্রি কমেছে। দুই বছর ধরে করোনা মহামারির কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ, ফলে এসব জায়গায় পত্রিকা বিক্রি হচ্ছে না। এমনকি বাসাবাড়িতেও অনেকে পত্রিকা রাখছেন না, আমরা খুব কষ্টে আছি।

বান্দরবান বঙ্গ পেপার হাউজের মালিক অসীম রায় বলেন, এবারের লগ ডাউনে পত্রিকা বিক্রি অনেক কমে গেছে কিন্তু পত্রিকা আনতে খরচ অনেক বেড়েছে কিন্তু পত্রিকা বিক্রির বকেয়া পড়ে আছে অনেক টাকা। আমরা তো চাইলেই এখন অন্য পেশায় যেতে পারি না। দু-একজন হকার পাশাপাশি অন্য ব্যবসায় আছে। বাকিদের পত্রিকা বিক্রি করে সংসার চলে।

তিনি আরও বলেন, পত্রিকার মাধ্যমে করোনা ছড়ায় না। পত্রিকায় যদি করোনা ছড়ায় তাহলে আমরা করোনায় আক্রান্ত্র হতাম, সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে এখনও কোন হকার করোনায় আক্রান্ত হয়নি।

বান্দরবান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের জন্য খাদ্য সহায়তা করা হবে, তাদের জন্য অন্যদেরও এগিয়ে আসা উচিত।

আরও পড়ুন