কাজ এলজিইডির : লামায় ১০বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না করেই বিল উত্তোলন !

NewsDetails_01

লামায় বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের একাংশ
বান্দরবানের লামা উপজেলায় ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ে শেষ না করেই চুড়ান্ত বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদার। নির্মাণ কাজ শতভাগ সমাপ্ত দেখিয়ে চলতি জুন মাসের শেষ সপ্তাহে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করা হয়। অথচ বাস্তবে কাজের গড় অগ্রগতি ৫০ শতাংশের অধিক নয় বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন। তাছাড়া একটি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের এহেন কার্যকলাপে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়. স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লামা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। ১নং রিফুজি পাড়া, ৩নং রিফুজি পাড়া ও ফাইতং নয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যাকেজে ৩২ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে মায়াধন কন্সট্রাকশনকে ও ছাগলখাইয়া, চেয়ারম্যানপাড়া, অংহ্লারীপাড়া ডলুছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যাকেজে ৬০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে মেসার্স ইউটি মং কন্সট্রাকশনকে এবং মেরাখোলা, লামামুখ, মধুঝিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যাকেজে ৪১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে মেসার্স মার্মা কন্সট্রাকশনকে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়। ভূমি সমস্যার কারণে ইতিমধ্যে চেয়ারম্যানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের বরাদ্দকৃত ৩৩ লাখ টাকা ফেরত গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়গুলো মধ্যে কোনটির সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ শতকরা বিশ ভাগ, কোনটি ৩০ভাগ আবার কোনটি ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আবার ফাতইং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ এখনো শুরুই করা হয়নি। ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ তাদের ইচ্ছেমত যেনতেন কাজ করে যাচ্ছেন। যেন দেখার কেউ নেই।
ফাইতং নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়নি। এদিকে ছাগলখাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার ও লামামুখ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবচার জানিয়েছেন, তাদের বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ আনুমানিক ৪০ শতাংশ হয়েছে।
এ বিষয়ে মেসার্স ইউটি মং ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী ইউটি মং সাংবাদিকদের জানান, সরকারি কোষাগার থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য তিনি কোথাও স্বাক্ষর করেননি, কাজটি আরেকজন করছেন। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তার জানা নেই।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার মহাজন বলেন, চুড়ান্ত বিল উত্তোলনের বিষয়টি জেনেছি। টিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করলে বিল ছাড় করা হবে।
কাজ শেষ না করেই চুড়ান্ত বিল উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় সরকার উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের লামা উপজেলা সার্ভেয়ার মো. জাকের হোসেন মোল্লা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ বিধায় চূড়ান্ত বিল করে টাকা উত্তোলন করে রাখা হয়েছে। কাজ সম্পন্ন করলে ঠিকাদারদের বিল ছাড় করা হবে।

আরও পড়ুন