কেমন আছেন বান্দরবানের করোনা প্রতিরোধের দুই যোদ্ধা ?

সৌরভ দাশ শেখর-খলিলুর রহমান

NewsDetails_01

করোনার শুরু থেকে বান্দরবানে ত্রাণ তৎপরতা ও করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা,হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করে আলোচনায় আসেন ৬নং ওয়ার্ডের পৌর কমিশনার সৌরভ দাশ শেখর ও পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর এর ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান সোহাগ। আর এই করোনা প্রতিরোধ যোদ্ধারা একসময় নিজেরাই করোনা আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

কেমন আছেন তারা ? অসুস্থ শরীরেও করোনা প্রতিরোধে মানবিক মানুষগুলো কি বলছেন? আপনাদের, আমাদেরকে। পাহাড়বার্তা’র সাথে তাদের অনলাইন সাক্ষাতকার নিয়ে এস বাসু দাশ এর প্রতিবেদন।

করোনা আক্রান্ত পার্বত্যমন্ত্রী ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান সোহাগ নিজের শারীরিব অবস্থার কথা বলতে গিয়ে বলেন, করোনার রিপোর্ট পাওয়ার পর গত বুধবার (১০ জুন) সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়, আমি হাসপাতালে ভালো সেবা পাচ্ছি। তবে আমার শরীরটা বেশ ভালো নয়।

তিনি পাহাড়বার্তা’কে আরো বলেন, করোনাকে আমরা যতটা সহজভাবে দেখি, আসলে রোগটা তারচেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ। প্রতিটা ক্ষন প্রতিটা মুহুর্ত কঠিন এক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যায়। সবচেয়ে বড় ঔষধ হলো মনোবল শক্ত রাখা। যারা মনবল ঠিক রাখতে পারবে, তারাই করোনাকে জয় করে ফিরে আসতে পারবে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

তিনি বান্দরবানের মানুষের উদ্দ্যেশে বলেন,স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সবাইকে আরো অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। করোনায় সচেতনতার কোন বিকল্প নাই।

NewsDetails_03

অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত পৌর কমিশনার সৌরভ দাশ শেখর বলেন, আজ অনেক ভালো আছি। আমি বাসা থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি, গত পরশুদিন প্রেসার ৬৫/৪০ এ নেমে এসেছিল। গলা ব্যাথা, তবে জ্বর নেই, আমার সর্দি আছে।

একজন করোনা রোগীকে কি করতে হবে এই ব্যাপারে তিনি পাহাড়বার্তা’কে বলেন, করোনার প্রথম দিন শরীর একটু একটু ব্যাথা, একটু জ্বর জ্বর ভাব, সর্দি লাগছে এমন হলে তখন নিজেকে পরিবারের এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে সম্পূর্ন আলাদা রাখতে হবে। ডাক্তারকে উপসর্গগুলো বলে ওষুধ শুরু করতে হবে। দু-তিন দিনের মধ্যে যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তারপর নমুনা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে দ্রুততার সহিত রিপোর্ট পাওয়া গেলে রোগী এবং অন্যান্যরা নিশ্চিত হতে পারবে ব্যক্তি করোনা পজেটিভ।

তিনি আরো বলেন, রোগীদের ক্ষেত্রে মনোবল মহা ওষুধ বলে আমি মনে করি। ডাক্তারি চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া যে সমস্ত চিকিৎসা আছে সবগুলোই অনুসরণ করতে হবে। চিন্তা একেবারেই করা যাবে না। দিনে অন্তত তিন বার গরম ভাব অন্যান্য জিনিসের সংমিশ্রণে নিতে হবে। যেমন আদা, রসুন, লং, এলাচি, দারুচিনি, কালোজিরা, মধু, তেজপাতা, সরিষার তৈল, লেবু । শরীর কোন অবস্থাতে দুর্বল হতে দেওয়া যাবে না। তার জন্য মাছ, মাংস, ডিম, দুধ অবশ্যই খেতে হবে। যারা বাসায় চিকিৎসা নিবেন তাদের জন্য একটি অক্সি পালস মিটার এবং অক্সিজেন সিলেন্ডার থাকা অতীব জরুরী।

করোনা প্রতিরোধের বিষয়ে তিনি মনে করেন, করোনার অতি সংক্রমনের হাত থেকে বান্দরবান কে বাঁচাতে হলে সর্বপ্রথম আমাদের আগে আক্রান্ত মানুষগুলোকে চিহ্নিত করা দরকার। তারা যাতে নতুন করে আর কারো মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াতে না পারে। এই কাজটা করতে পারলে আমরা বান্দরবানকে অনেক ভালো রাখতে পারবো।

পৌর কমিশনার শেখর দাশ এর নমুনা পাঠানোর ১৭ দিনের মাথায় গত ৯ জুন রাতে জেলার সিভিল সার্জন ডা: অং সুই প্রু মারমা পাহাড়বার্তা’কে নিশ্চিত করেন তিনি করোনায় আক্রান্ত।

অন্যদিকে, গত ৪ জুন পার্বত্যমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান সোহাগ এর নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছিলো,গত ৭ জুন রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং গত ১০ জুন থেকে তিনি সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে আছেন।

আরও পড়ুন