খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত জনপদে পৌঁছছে না সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ি জেলার দুর্গম এলাকার মানুষ করোনায় সরকারের বিশেষ ত্রান সহায়তা না পেয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দুরত্বের কারণে এসব এলাকায় সরকারি ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। যান চলাচল বন্ধ থাকায় বাজারেও আসা যাওয়া করতে পারছে না তারা। আবার নিজেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য উৎপাদিত কৃষিসহ অন্যান্য পণ্যও বিক্রি করতে পারছে না। এই অবস্থা চলতে থাকলে দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট। দ্রুত দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মেরং ইউনিয়নের ১ ওর্য়াডের ৪ গ্রামে ত্রাণ পৌঁছেনি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্যরা । তাদের দাবি এই ওয়ার্ডের সীমানা পাড়া, হাজাপাড়া এবং তৈদুপাড়া, বিষ্ণু কার্বারি পাড়ায় কোন ত্রাণ পৌছেনি। এই অবস্থা এসব দুর্গম গ্রামে খাদ্য সংকটের শঙ্কা রয়েছে।

সাবেক ইউপি সদস্য হথেন্দ্র ত্রিপুরা জানান,‘ হাজাপাড়ায় প্রায় ২শ,তৈদুপাড়ায় ৭০ পরিবার এবং সীমানা পাড়ায় বাস করে প্রায় ৫০ পরিবার। কিন্তু এসব গ্রামে এখনো সরকারি -বেসরকারি কোন ত্রাণ পৌছেনি। ত্রাণ না পাওয়ায় তাদের খাদ্য সংকট রয়েছে। দ্রুত ত্রাণ পৌছানোর দাবি জানান তিনি।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন,গত শুক্রবার মেরুং ইউনিয়নের ৭ টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হয়তো আজ থেকে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে। এসব গ্রামে যাতে ত্রাণ পৌছায় সেই ব্যবস্থা করা হবে। ’এসব গ্রামে যাতে ত্রাণ পৌছায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।

এদিকে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণে প্রান্তিক এলাকায় সরকারি উদ্যোগে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’ খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির।

NewsDetails_03

সংগঠনের সভাপতি ও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. সুধীন কুমার চাকমা এবং সা: সম্পাদক এড. নাসির উদ্দিন আহমেদ শুক্রবার রাতে প্রেরিত এক বিবৃতিতে করোনা সংকটের সাথে সাথে খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত জনপদে গণহারে শিশুদের অসুস্থতা মোকাবেলায়ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

সুজন নেতৃবৃন্দ জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগে সমাজের সর্বস্তরের পেশাজীবিদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা গেলে ত্রাণ ও অন্যান্য পরিষেবা কার্যক্রমে গতি আসবে বলে মত ব্যক্ত করেন। করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসাকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সরকারিভাবে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী প্রদানেরও কথা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিদাতারা মনে করেন, এই সংকটে দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশা ও কর্মে নিয়োজিতরা অনেকেই নানা পথে খাগড়াছড়িতে প্রবেশ করছেন। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে যাঁরা আসছেন, তাঁদেরকে শনাক্ত করা যেমন জরুরী, তেমনি তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনও অত্যাবশ্যক।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ ও খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। বরাদ্দ পাওয়ামাত্র তা ইউএনও এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ওয়ার্ড পর্যায়ে তালিকা করে বন্ঠন করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, দুর্গম পাহাড়ি এলাকার বেশির ভাগ নিম্ন আয়ের এসব মানুষ সাধারণ জুমের উপর নির্ভরশীল। করোনার কারণ গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কারণে এসব এলাকার সাথে বন্ধ রয়েছে যাতায়াত। উৎপাদিত পন্য বিক্রি করতে না পারায় তাদের আয়ের বন্ধ গেছে।

আরও পড়ুন