জনপ্রিয়তা ও ভূমি বিরোধেই কাল হলো লামার আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীরের

NewsDetails_01

আলমগীর সিকদার
বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলমগীর সিকদার হত্যার অন্যতম কারন হিসাবে আলোচনায় আসছে তার জনপ্রিয়তা ও ভূমি বিরোধ। যার কারনে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হলো তাকে।
সূত্রে জানা গেছে,হত্যাকান্ডের ঘটনায় এজাহার নামীয় ৩জন ও অজ্ঞাত ৬ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। নিহত আলমগীর সিকদারের ছোটভাই দস্তগীর সিকদার বাদী হয়ে লামা থানায় মামলাটি করেন। মামলার সূত্র ধরে শুক্রবার পর্যন্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে প্রধান আসামী সাইমন ত্রিপুরাকে (২৬) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আটকের পর তাকে উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ রিমান্ড চাইলে আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, গত ২৩ জুলাই দিনগত রাতে একটি সিন্ডিকেট ভাড়াটিয়া খুনির মাধ্যমে আলমগীর সিকদারকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পরদিন বুধবার ভোরে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় মামলার প্রধান আসামী সাইমন ত্রিপুরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাইমন ত্রিপুরা পুলিশের নিকট স্বীকার করেছে এই হত্যাকান্ডে সে সহ মোট ৩ জন সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে, একটি গ্রুপ তাদেরকে ভাড়ায় এনেছে। গ্রেফতার সাইমন ত্রিপুরা থানচির সদর ইউনিয়নের বিদ্যামনি পাড়ার মনিরাম ত্রিপুরার ছেলে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবান চিম্বুক থেকে আরেক আসামীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি মোটর সাইকেল ও একটি হেলম্যাট এবং দুটি দা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িতদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এই ঘটনার সাথে অপর জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। এদিকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত খুনিরা যাতে বিদেশ পাড়ি জমাতে না পারেন সেদিকেও সর্তক দৃষ্টি রাখা হয়েছে।
এদিকে, এলাকায় জনপ্রিয়তা ও ভূমি বিরোধকে এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ হিসেবে দেখছেন নিহতের ছোট ভাই ও মামলার বাদী মো. দস্তগীর সিকদার। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমার বড় ভাই এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। আগামী ইউপি নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে এবং সরই আলাদা উপজেলা হলে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার আশা ব্যক্ত করেছিলেন। তাই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে আমাদের ভূ-সম্পত্তি বিষয়ে কয়েকজনের সাথে বিরোধ রয়েছে। সেটাও খুনের কারণ হতে পারে। আমাদের ধারনা খুনিরা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ছিল।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আমিনুল হক জানায়, মামলার অপরাপর আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে (২৩ জুলাই) সরই ইউনিয়নের হাছনা ভিটায় নিজ খামার বাড়ি হতে বাড়ি ফেরার পথে দা দিয়ে কুপিয়ে আলমগীর সিকদারকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আলমগীর সিকদার সরই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিকদারের বড় ছেলে। সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিকদার ও তার স্ত্রী বর্তমানে হজ্ব পালনের জন্য মক্কায় অবস্থান করছেন। নিহতের পরিবারের পক্ষে ছোট ভাই দস্তগীর সিকদার থানায় এজাহার দায়ের করলে পুলিশ হত্যা মামলা রেকর্ড করেন।

আরও পড়ুন