দেবতা প্রদত্ত ডিম ! রাতভর খোজাখুজি, শেষে যা হল….
১লা বৈশাখ, ১৪২৭ প্রতিদিনের নিয়মে ঘুমিয়ে পরি। রাত প্রায় ১০ টায় আমার বাড়ির পাশে এক ভদ্রমহিলা ডাকছে এই নবতারা বাপ, নবতারা বাপ ওঠ!!! নবতারা বাপ বলে কি হয়েছে ?
আরে মারিশ্যা বটতলী থেকে বেইয়াইন কল দিচ্ছে সবুজ গাছের নীচে দেবতার প্রদত্ত ডিম পাওয়া যাচ্ছে। যা পানিতে ভিজিয়ে খেলে অমঙ্গল কেটে যাবে। সেই নবতারা বাপের পরিবার আবার ডাক দেয় নিকটস্থ উজ্জলাকে। এভাবে শুরু হল খোজাখুজি। আমি বিছানায় শুয়ে শুনতে ছিলাম। পাশের বাড়ির লোকেরাও কানাঘুষা করছে তখন আর শুয়ে থাকা হল না।
উঠে গেলাম বাড়ির নিকটতম জারুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনয়ন চাকমা সম্পর্কে দাদুর বাড়ি। তার ছেলে জিনিয়াস চাকমা আমার শব্দ শুনে বেড়িয়ে এলেন। বললেন, বাবুছড়া থেকে তার বন্ধুরা কল দিচ্ছে। কথাটা তাদের অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। কিন্তু গাছের তলায় গিয়ে সত্যি পাওয়া যাচ্ছে।
আমি ও যোগ দিলাম তদন্ত করতে। প্রথমে কেউ কিছু পায়নি। লোকের বলাবলি করছে এখন বাবুছড়া থেকে কল দিয়ে তাদের পাওয়ার কথা স্বীকার করছে। সেখানে এসে হাজির প্রাক্তন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সুসময় চাকমা। তিনি ও বললেন, অনেকে তাকে ফোন করে পাওয়ার কথা স্বীকার করছে। তিনি কয়েকটি জায়গার নাম উল্লেখ করেন।
আমি মেসেঞ্জারে থাকা অবস্থায় রিং দিলাম বাবুছড়া বাসিন্দা উদাল বাগান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বন্ধুপ্রতিম নিউটন চাকমাকে। তিনি বললেন,আমি কিছু জানি না। আমাদের বাড়িতে সবাই ঘুম। আবার ফোন দিলাম বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেস্মি চাকমাকে। তিনি ঘুমে প্রতিবেদককে চিনতে পারছেন না, পরিচয় দিলাম। তিনি বললেন -আমি জানলে আমিও খোজ নিতাম। এত রাতে ভয় করছে। আর অন্য সদস্যদের ও ডাকতে ইচ্ছে হচ্ছে না।
ততক্ষণে শুনা গেল পেয়েছি পেয়েছি। ওমা! কি তা দেখি। ছোট এক মটর বিচির মত জিনিস। অনেক লোক। মিথ্যা বলার বা রচনার সুযোগ নাই। যাক আমার বাড়ির পশ্চিমে বাড়ির উৎপলের মার হাতে দেখলাম। একটা ছবি তুললাম। সেই তথাকথিত দেবতার প্রদত্ত ডিম। যা পাওয়া গেছে সেই ডিম নামক জিনিসটা ভেঙে ফেললেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মেয়ে সিস্না চাকমা। ভীতরে মটর বিচির মত জিনিস। ডিমের কোন অস্তিত্ব নাই।
ততক্ষণে মেসেঞ্জার গ্রুপে ভাইরাল হয় খবরটি। বাবুছড়া থেকে ও অনেক ডিমের ছবি প্রতিবেদককে পাঠান। সেগুলো ও দেখতে আমার দেখা ডিম বা বিচির মত। আমার এলাকায় ও আরো অনেকে সেই বিচি পেলেন। তাহলে জিনিসটি কী গুজব? নাকি অন্য কিছু?
বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করলেন, প্রধান শিক্ষক সুনয়ন চাকমা। তার কথায় এই ডিম দ্বারা যদি অমঙ্গল দূর হয় তাহলে পাপ -পুণ্যের প্রয়োজন পরত না। এইসব তিনি বিশ্বাস করেন না।