নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থেমে নেই

NewsDetails_01

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাটা তারের বেড়ার কাছে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা
মিয়ানমারে গত দশ দিন পূর্বে শুরু হওয়া দমন নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রতিদিন রোহিঙ্গা নাগরিক অনুপ্রবেশ করছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চাকঢালা ও ঘুমধুমের তুমব্রু থেকে ফুলতলী পর্যন্ত মধ্যবর্তী বেশ কটি এলাকায় গতকালও এসেছে শত শত রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা সুযোগের অপেক্ষায় থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের স্বজনদের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জামছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের চূড়ায় আনুমানিক দুই হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক প্লাষ্টিক দিয়ে ছোট ছোট ঘর তৈরী করে রোহিঙ্গা নাগরিকরা আশ্রয় নিয়েছে। ক্যাম্পের আরো তিন দিক সম্পূর্ণ খোলা রয়েছে। এই খোলা পথ দিয়ে কাঁেধ মালামাল নিয়ে নতুন নতুন রোহিঙ্গারা প্রবেশ করছে ক্যাম্পে। বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নাগরিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, শনিবার রাতে মিয়ানমার থেকে বের হয়ে তারা রোববার সকাল ১১টার দিকে এই ক্যাম্পে পৌছেন।
আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতিটি ঘর ঘুরে দেখা যায়, প্লাষ্টিক আর বিছানা ছাড়া তেমন কোন সম্ভল নেই অধিকাংশ রোহিঙ্গার। কেউ কেউ বসতবাড়ির গবাদি পশু নিয়ে আসলেও বাংলাদেশের কিছু অসাধু মানুষ শ-দুই শত টাকার শুকনো খাবার দেওয়ার নামে ক্যাম্পে ঢুকে রোহিঙ্গাদের ফুসলিয়ে নামে মাত্র মূল্যে তা কিনে নিয়েছে। তবে প্রকৃত সাহায্য প্রার্থীর সংখ্যাও কম নয়। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে রোহিঙ্গাদের সাহায্য আর খাবার দিতে ছুটে যাচ্ছেন। ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়াদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
রোববার দুপুরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাহায্য প্রদান করেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবি ও বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস (বিএইচআরএফ) এর চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি এএম জিয়া হাবিব আহসান, ডাক্তার নুরুল আমিন, মানবাধিকারকর্মী মোহাম্মদ এরশাদ, আলহাজ্ব আজিজুল হক ও জিয়াউল হকের নেতৃত্বে একটি টিম। কথা হলে এডভোকেট এএম জিয়া হাবিব আহসান এ প্রতিবেদককে বলেন, অত্যাচারিত রোহিঙ্গাদের মানবিক কারনে তাদের একটি টিম ছুটে এসেছেন। রোহিঙ্গাদের জীবন ধারনের জন্য অনেকে সাহায্য নিয়ে যাচ্ছেন দেখে তিনি অত্যান্ত খুশি। তবে ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে নারী-শিশুরা মানবিক বিপর্যয়ে রয়েছে বলে তিনি জানান।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছে। বিজিবি সর্তক অবস্থায় রয়েছে। তবে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস,এম, সরওয়ার কামাল বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে ব্যবস্থা নিবেন। সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ করছেন।

আরও পড়ুন