পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬ মাসে ৩৯ খুন : ধর্ষণের ঘটনা ১৯টি

NewsDetails_01

পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০১৯ সালের জানুয়ারী হতে জুন মাস পর্যন্ত ৩৯ টি হত্যাকান্ড ও ৩৯ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএইসসি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ষান্মষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আজ ৭ জুলাই (রোববার) গণমাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান পলাশ স্বাক্ষরিত প্রেরিত প্রতিবেদনে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারী হতে জুন পর্যন্ত খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর আভ্যন্তরীণ কোন্দলে ৩৯ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ গ্রামবাসীসহ আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আহত হয়েছে অন্তত ৬৭ জন, অপহরণের ঘটনা ১৫ টি, ধর্ষণের ঘটনা ১৯ টি। ছয় মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ ও নিয়মিত অভিযানে ৫৬ টি বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ৫ শত ৯৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ৪৭ জন, বজ্রপাতে ৩ জন, পানিতে ডুবে ২০ জন এবং আত্মহত্যা করেছে ১১ জন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ছয় মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র এবং গোলাবারুদ্ধ উদ্ধারের অধিকাংশ পাওয়া গেছে আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর আস্তানা বা নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা থেকে। এ সময়ের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সন্তু গ্রুপের কাছ থেকে ১৪ টি বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৪৪৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা গ্রুপের কাছ থেকে ১ টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের কাছ থেকে ১৮ টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৮৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া পরিত্যক্ত অবস্থায় ২৩ টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ৬০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক(সুজন) খাগড়াছড়ির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, আঞ্চলিক কয়েকটি সংগঠন মূলত চাঁদাবাজির আধিপত্য ধরে রাখতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। তারা শান্তিপূর্ণ মানুষের চেয়ে সংখ্যায় বেশী না এবং রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী নয়। শুধুমাত্র বড় বড় হত্যাকান্ডের পর ঢাকঢোল পিটিয়ে বিশেষ অভিযানে না নেমে নিয়মিত সন্ত্রাসীদের পেছনে অভিযান অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি সহ অন্যান্য বাহিনী যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অন্য দুই জেলার চেয়ে খাগড়াছড়ির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবি করে অবৈধ অস্ত্রধারী ও সন্ত্রাসদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান।

আরও পড়ুন