পাহাড়ে ফের উত্তেজনা

NewsDetails_01

রাঙামাটির লংগদুর ঘটনার এক মাসের মাথায় খাগড়াছড়িতে পাহাড়ী বাঙালীদের মাঝে উত্তেজনা ও অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে। গত শুক্রবার রাতে রামগড় উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোনাইগ্যা, ব্রতচন্দ্র পাড়া, কালাডেবা ও টিলাপাড়া এলাকায় পাহাড়ী গ্রামে বাঙালীদের প্রবেশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ পাহাড়ী বাঙালীদের মাঝে উত্তেজনা ও আতঙ্ক দেখা দেয় বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
রামগড় সদর ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার ক্যারি মার্মা জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার পর বট্টচন্দ্র পাড়া ও টিলাপাড়া এলাকায় আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বাঙালীরা হৈ-চৈ করে ঢুকায় ওসব এলাকার পাহাড়ী বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আসলে লোকজন এলাকায় ফিরতে শুরু করে। সম্প্রতি সময়ে রাঙামাটির লংগদুতে পাহাড়ী গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রামগড় সদর ইউপির চেয়ারম্যান মো: শাহ আলম মজুমদার জানান, শুক্রবার রাতে কালাডেবা ও সোনাইগ্যা এলাকার মাঝবর্তী সোনাইছড়ি ছড়ার সুইচ গেইট এলাকায় পাহাড়ী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ ফাকা গুলি ছুঁড়ে কালাডেবা ও সোনাইগ্যা এলাকায় ঢুকার চেষ্টা করে। তখন বাঙালীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা পালিয়ে পাহাড়ী গ্রামে আশ্রয় নেয়। তখন সাধারণ পাহাড়ীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। ইউপিডিএফ সমর্থিত সন্ত্রাসী গ্রুপের লোকজন শুক্রবার সকালেও রামগড়ের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা তৈরীর চেষ্টা করলেও প্রশাসনের অবস্থানের কারণে ব্যর্থ হয়ে রাতে বাঙালী গ্রামে হামলার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মামুন মিয়া জানান, শুক্রবার রাতে সন্ত্রাসী তাড়া করার ঘটনায় রামগড় সদরের কয়েকটি পাহাড়ী অধ্যূষিত গ্রামে পাহাড়ী বাঙালীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে এলাকার শান্তি সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শনিবার দুপুরে সোনাইগ্যা এলাকার সর্বস্তরের জনগণদের নিয়ে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভা করা হয়। এতে রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছৈয়দ মোহাম্মদ ফরহাদ, ৪৩ বিজিবি’র উপ-অধিনায়ক মেজর হুমায়ুন কবীরসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ইউপিডিএফ সমর্থিত কোন সংগঠনের কর্মসূচিতে শুক্রবার বাধা দেয়া হয়নি দাবি করে ইউএনও মো: মামুন মিয়া।
২০১১ সালে পাশ হওয়া বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা ১১ দফা নির্দেশনা বাতিলের দাবিতে গত ৩০ জুন খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ইউপিডিএফ সমর্থিত কয়েকটি সংগঠন। রামগড়ের উপজেলা লেক, মাস্টার পাড়া ও যৌথ খামার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করতে চাইলে প্রশাসন তাতে বাধা দেয় বলে জানা যায়।
পিসিপি’র বিক্ষোভ: রামগড়ে পাহাড়ী এলাকায় পুনর্বাসিত বাঙালীদের হামলায় দুইটি দোকানসহ ১১টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দাবি করে খাগড়াছড়ি শহরে শনিবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুবফোরাম।

আরও পড়ুন