বান্দরবানের লামার যে বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পথে !

NewsDetails_01

যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্তরিকতায় দুর্গম পাহাড়ি জনপদে আলো ছড়াচ্ছে ধুইল্যাপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্তু সেই শিক্ষকদের বেতন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপবৃত্তির ব্যবস্থা না থাকা, অবকাঠামোর অপ্রতুলতার কারনে জেলার শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়ন বিদ্যালয়টি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়ন পরিষদের থেকে অন্তত ৫ কিলোমিটার উত্তরে ১৯৯৮ সালে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী সিকদারের সহযোগিতায় অবহেলিত এলাকার গরীব শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কৃষক সমশু মিয়ার দানকৃত.৪০ শতক জমির উপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টা করা হয়।

বিদ্যালয়টির ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানিশা আক্তার বলেন,আমাদের স্কুল সরকারি না হওয়ায় আমরা উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, আমাদের মা বাবা অত্যান্ত গরিব, আমাদের পড়া লেখার খরচ চালাতে সমস্যায় পড়ে।

আরো জানা গেছে, এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্ত্রী বৃদ্ধি পেলেও প্রতিষ্ঠার ২১ বছর অতিক্রম হলেও বিদ্যালয়টিতে রয়েছে শ্রেণি কক্ষ সংকট। পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষের অভাবে ক্লাশে ছাত্র – ছাত্রীদের বসতে হচ্ছে গাদাগাদি করে। ধুইল্যাপাড়া স্কুলটি বেসরকারিভাবে পরিচালিত এবং এলাকার মানুষ দরিদ্র হওয়ায় পারতেছে না স্কুলের সমস্যা সমাধান করতে। শিক্ষকদের বেতন ও শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তির ব্যবস্থা না থাকলেও বিশুদ্ধ পানির অভাব,স্যানিটেশন ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে। উপবৃত্তির টাকা না পাওয়ায় দুর্গম এলাকার দরিদ্র বাবা মায়ের স্বল্প আয়ে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

NewsDetails_03

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ে আমরা ৪ জন শিক্ষক দীর্ঘ দিন থেকে সম্পূর্ণ বিনা বেতনে, খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্ট করে দুর্গম এলাকার কোমলমতি প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

আরো জানা যায়,বিদ্যালয়টি ৩য় ধাপে জাতীয়করণের জন্য ২০১৩ সালে জেলা -উপজেলার জাতীয়করণ সংক্রান্ত কমিটির পক্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হয়, সব কাগজ পত্র যথাযথ থাকার পরেও বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়ে, যার ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছে শিক্ষকরা, অন্যদিকে সরকারি-সুযোগ সুবিধার অভাবে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্ত্রীরা।

সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম বলেন, আমার ইউনিয়নের ধুইল্যাপাড়া গ্রামের অন্তত ৫ কিলোমিটারে মধ্যে কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় বিদ্যালয়টির গুরুত্ব অপরিসীম। বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকেরা বিনা বেতনে শিক্ষকতা করে যাচ্ছে। তাই আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এদিকে স্কুলটি ঠিকিয়ে রাখার স্বার্থে সরকারিকরণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সহযোগিতা কামনা করেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

আরও পড়ুন