বান্দরবানে স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজন প্রশাসনের হার্ডলাইন !

NewsDetails_01

করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে এক মিটার দূরত্ব রেখে চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও বান্দরবানে অনেক মানুষ তা মানছে না। সামাজিক দূরত্বের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই যেনতেন ভাবেই ঘোরাঘুরি করছে হাটবাজারে অসংখ্য মানুষ, আর এতে করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় আতংকিত বান্দরবানের সচেতন নাগরিক। স্থানীয়রা মনে করছে, করোনা নিয়ে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে এবার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হোক।

বান্দরবানের সবজি বাজার, মুরগি বাজার ও মাছ বাজারে গাদাঁগাদি করে অনেকেই ব্যস্ত সময় পার করছে বাজার করার জন্য। করোনার সংক্রামক রোধে ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রশাসনের প্রচারণা অনেকটাই ব্যর্থ প্রমানিত হচ্ছে এসব হাট-বাজারের চিত্র দেখে। আর এদিকে অসচেতন নাগরিকদের এমন আচরণে সচেতন মানুষের মনে দেখা দিয়েছে শংকা আর আতংক।

বান্দরবান বাজারে বাজার করতে আসা ছোটন দাশ বলেন, বান্দরবানে সামাজিক দূরত্ব মানছে না অনেকেই। মাছ বাজার ও মুরগী বাজারে জনসাধারণ গায়ের সাথে গা ঘেষে চলাচল করছে, এতে সবাইকে বিপদে পরতে হচ্ছে।

বান্দরবান বাজারে মাছ কিনতে আসা মোতালেব বলেন, সামাজিক দূরত্বের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বান্দরবান বাজারে যেনতেনভাবেই ঘোরাঘুরি করছে মানুষ। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের লোকজন এসে নিষেধ করলে কিছুক্ষণ সবাই সাবধান হয়, পরবর্তীতে সবাই আবার একত্রিত হয়ে চলাফেরা করছে।

বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দিপ্তী কুমার বড়ুয়া জানান, করোনার এই মহামারিতে আমরা আতংকিত। কিছু কিছু মানুষের বাজারে এমনভাবে চলাফেরা করছে যাতে কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না এমন ভাব। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের উচিত বান্দরবানের মাছ বাজার এবং কাঁচা বাজারে সার্বাক্ষনিক তদারকি করা।

এদিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছে, এমন পরিস্থিতিতে অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরা বন্ধ না করা গেলে এর ফল খুবই খারাপ হবে আর তার মাসুল দিতে হবে আমাদের সবাইকে।

NewsDetails_03

শুধু বাজারের চিত্র নয়, এই একই দৃশ্য দোখা যায় শহরের আর্মিপাড়া ও বালাঘাটা বাজারে। তাই স্থানীয়রা মনে করছে, এখন আইনশৃংখলাবাহিনীর উচিত স্বাস্থ্য বিধি অমান্যকারীদের জরিমানা করা। এতে কিছুটা হলেও কমবে সামাজিক দূরত্ব অমান্যের বিষয়টি।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা:অং সুই প্রু মারমা বলেন, বান্দরবানে এখনো কোন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়নি, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত সু:খবর। আমাদের সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে হয়তো আমরা রক্ষা পাব।

সিভিল সার্জন আরো বলেন, আমাদের এই মুহুর্র্তে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো সামাজিক দূরত্বের বজায় রাখা আর ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া আর এর ব্যতয় ঘটলে আমাদের চরম বিপদে পরতে হবে।

বান্দরবান শহরের কাঁচা বাজারে আজ মঙ্গলবার সকাল ১১,৩০ মিনিটে ধারণ করা দৃশ্য। ছবি-পাহাড়বার্তা

জটলা পাকিয়ে দোকানে আড্ডা দেওয়াসহ কাঁচাবাজার, ব্যাংক ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে জনসাধারণের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে সর্বত্র। যদি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রশাসনসহ ভ্রাম্যমান আদালত।

বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো:হাবিবুল হাসান বলেন,আমরা করোনা ভাইরাস সংক্রামক রোধে কাজ করে যাচ্ছি, আমরা চাই সবাই সুস্থ থাকুকু।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো:হাবিবুল হাসান আরো বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি এবং জনগণকে সচেতন করছি, আর যারা সচেতন না হয়ে এখনো যেকোন স্থানে এলোমেলোভাবে আনাগোনা করছে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো:শামীম হোসেন বলেন, যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না এবং সামাজিক দূরত্ব না মেনে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বান্দরবানে করোনা সংক্রামক প্রতিরোধে সরকারের নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসনের আরো কঠোরতা নিশ্চিত করার তাগিদ সুশীল সমাজের।

আরও পড়ুন