বান্দরবানের লামা উপজেলার মিরিঞ্জা ঐবক পাড়া (পুইট্টা) ম্রো পাড়ার ৩৫ পরিবারের সদস্যরা এক সময় দীর্ঘ ৫শ ফুট উঁচু পাহাড় অতিক্রম করে যাতায়াত করত। বিশেষ করে বর্ষাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ী পথ অতিক্রম করে পাড়া থেকে অন্যত্র যাতায়াত করতে বেশ কষ্ট হত। আজ বীর বাহাদুরের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বদলে গেছে পিছিয়ে পড়া ম্রো আদিবাসীদের জীবনযাত্রা। এমন কথা পাহাড়বার্তার প্রতিবেদককে জানালেন, ঐবক পাড়া (পুইট্টা) ম্রো পাড়ার বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পাহাড়ী উঁচু পথ অতিক্রম করে তাদের উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য সামগ্রী পাড়া হতে মিরিঞ্জায় ও লামা বাজারে নিয়ে আসতে নির্ধারিত সময়ের চাইতে অনেক দেরি হওয়ার কারনে কম মূল্যে বিক্রি করতে হত। এই ম্রো পাড়ায় জীবন যাত্রার মানের ব্যাপক পরিবর্তন আসে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র একান্ত আন্তরিক প্রচেষ্টায়। পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে মিরিঞ্জা হতে মুরুং পাড়া যাওয়ার ২৮০ ফুট সিড়িঁ নির্মানের পর।
পুইট্টা পাড়ার বাসিন্দা মাংকুম ম্রো ও মেনওয়াই ম্রো পাহাড়বার্তাকে বলেন, সিঁড়ি নির্মান করে দেওয়াতে আমরা মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে কৃতজ্ঞ, তবে দুঃখের বিষয় হল শুকনো মৌসুমে আমরা বিশুদ্ধজলসহ নিত্য ব্যবহারের জলের অভাবে সীমাহীন কষ্টের সম্মুখীন হই।
এরপর থেকে যে কোন মৌসুমে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকার কারনে কৃষি পণ্য উৎপাদন ও পরিবহনে সহজ হওয়ায় পাড়ায় ব্যবসার প্রসার ও উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাওয়াসহ ব্যবসায়িদের যাতাযত এর ফলে অত্র পাড়ায় অবকাঠামো গত উন্নয়নসহ, মালামাল পরিবহনণের বেশ সুবিধা হয়েছে। এখন এসব এলাকায় গড়ে উঠছে সেমি পাকা বাড়ি, আর বাড়িগুলো আলোকিত হচ্ছে সৌর বিদ্যুৎতে।
সরেজমিনে দেখা যায়,লামার পুইট্টা পাড়ার ম্রো আদিবাসীদের প্রধান পেশা হল পশুপালন, কৃষি পণ্য উৎপাদন বনজ ও ফলদ বাগান। এসব থেকে প্রাপ্ত অর্থে তাদের চলে যায় বছরের দিনগুলো। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় তারা এখন আর্থিক ভাবে যেকোন সময়ের চেয়ে বেশ সচ্ছল।
পুইট্টা পাড়ার কার্বারী অংচা ম্রো পাহাড়বার্তাকে বলেন, আগে আমাদের যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট হত বীর বাহাদুর সিঁড়ি নির্মান করে দেওয়ার পর থেকে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি, আগে পাহাড়ের ঢালু বেয়ে আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে আসতে চাইতনা এখন যাতায়াতের সুবিদা হওয়ায় ছেলে মেয়েরা এখন স্কুুলে যাচ্ছে, শিক্ষা ক্ষেত্রেও আগের চেয়ে অনেক এগিয়ে স্থানীয়রা।
তিনি আরো বলেন, ১৯৩০ সালে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা এ পাড়ায় বসতি গড়ে তোলে এরপর থেকে আমরা উত্তরাধীকার সূত্রে বসবাস করে আসছি।